“ঢাঙ্গিকুসুম”—পশ্চিমবঙ্গের ঝাড়গ্রাম জেলার, বেলপাহাড়ি থানার এক প্রত্যন্ত পাহাড়ি গ্রাম, যেখানে সভ্যতার আলো আজও ম্লান। শাল-পিয়াল আর মহুলের ঘন ছায়ায় ঢাকা এই গ্রাম এখনো অনাহার আর দারিদ্র্যের গাঁথা বয়ে বেড়ায়।


"ঢাঙ্গিকুসুম", ওই পাহাড়ের তলে,
ঘাসফুল ফোটে ধূলোমাখা কোলে।
বাতাসে মহুলের গন্ধে ঘুরে,
পেটের আগুনে স্বপ্ন ঝরে।

গাঙচিল ডাকে, সিঁদুরে মেঘ কাঁদে,
শুকনো পাতারা ঝরে পথের বাঁকে।
পেট ফাঁকা, চোখে জল ঝরে,
ভাঙা থালায় স্বপ্ন রোজ মরে।

বুকের গভীরে জমে কষ্টের ভার,
বাপের চোখে আঁকা অপেক্ষার পার।
মাঠের ফাটলে ফসলের কান্না,
মায়ের চোখে গুমরে ওঠে যন্ত্রণা।

আলো আসে না, অন্ধকার ঘর,
অন্নের আশায় বাচ্চারা কাঁদে পরপর।
মা বলে, সন্ধে হল, পেটে আগুন জ্বলে,
ঈশ্বর জানে, দুমুঠো অন্ন কবে মেলে।

বাপ ফিরে আসে মাটি মাখা পায়ে,
বুক ভরা হতাশা, মাঠের বুক খালি।
ঘামে ভেজা ক্লান্ত শরীর,
চোখে-মুখে চেপে রাখা বেদনামাখা কালি।

শাল-পিয়ালের ছায়ায় উত্তপ্ত অনহার ,
মাঠের কোণে কাঁদে অনাথ কৃষকের চাপ।
ঘামের জলে ধুয়ে যায় কষ্টের রঙ,
তবু পেটের আগুনে নিভে যায় রোদ্দুরের রাগ।

পাহাড়ি বাতাস শুধু ক্ষুধার গান গায়,
বাতাস জুড়ে গাঙচিলের কান্না।
ধানশালিক ডাক দেয় নদীর পাড়ে,
পাখিরাও বোঝে বুকের জমে থাকা যন্ত্রণা।

"ঢাঙ্গিকুসুমে" আলো আসবেই আবার,
ক্ষুধার পাহাড় গুঁড়িয়ে দেবে নতুন প্রত্যয়বার।
"ঢাঙ্গিকুসুম" হাসবে সেদিন শিশিরে শিশিরে,
যেদিন নিভবে পেটের আগুন, "ধীরে ধীরে"।