⚓⚓⚓
ধীরে ধীরে মুছে যায় বাঙালির ছাপ,
বিলুপ্তির ছায়ায় ঢেকে যায় ইতিহাস,
যেখানে একদিন শঙ্খ ধ্বনিত হতো,
সেখানে আজ নীরবতার দীর্ঘশ্বাস।
বাণীহীনের ব্যথা জমে ভাষার কোণে,
গীতবিতানের পাতা আজ ধুলোয় ঢাকা,
বিবেকানন্দের আহ্বান মিশে গেছে,
উদাসীনতায় নির্লিপ্ত,অলস ফাঁকা।
শাড়ি, ধুতি, আলপনা উধাও,
কংক্রিটে ঢাকে মাটির ঘ্রাণ।
পুঁথির পাতায় জমেছে ধুলো,
বর্ণপরিচয় স্মৃতির বান।
রাজনীতির ছলনায় ব্যস্ত সবাই,
কেউ লুটেপুটে শাসন করে,
বাঙালির চেতনা নিভে গেছে প্রায়,
কেউ ভাবে না, কেউ কাঁদে না রে!
ধিক্কার জানাই নিস্তব্ধ জাতিকে,
যে শেকড় ভুলে পরের দাস,
যে মায়ের ভাষা বেচে দিয়ে,
অন্যের ভাষায় খোঁজে ইতিহাস।
শাঁখের আওয়াজ থেমে গেছে,
উৎসব আসে ডিজে’র তালে,
মায়ের আঁচলে যে গন্ধ ছিল,
মিশে গেছে পারফিউমের জালে।
ঘুড়ির বদলে স্ক্রিনে চোখ,
কুঁচকে গেছে ঠাকুরমার ঝুলি,
স্মৃতির পাতায় হারিয়ে গেছে,
ইমোজির মাঝে অনুভূতির বুলি।
শুধু বদলেছে পোশাক-ভাষা,
ভুলে গেছি পুরোনো সুর,
শুধু বলতে হয় বলে, বলি,
"আমরা বাঙালি, গর্বিত ভরপুর!"
চলো, এবার প্রশ্ন করি,
এ কেমন আধুনিকতার দাম?
শেকড় ভুলে কেমন বাঁচবি?
বল তো বাঙালি, কোথায় তোর মান?
অভিমানী এই বুকের মাঝে,
জ্বলে ওঠে আগুন দিনে রাতে।
আর কতকাল থাকবি বোবা?
জাগবি না তুই, আপন হাতে?
যদি এখনো ফিরে না তাকাস,
ইতিহাস লিখবে কঠিন বিচার।
"বাঙালি" তখন শুধুই গল্পেই রবে,
গৌরব কিছুই থাকবে না আর।
তবু হয়তো কোথাও এক বীজ,
মাটির গন্ধে খোঁজে পুরনো গান,
কোনো এক ভোরে নবীন রোদে,
বাঙালির রক্তে জাগাবে প্রমাণ।
---