কবিয়াল কৃষক
জাহিদ মোস্তাফি
আমি সাগর দেখেনি
দেখেনি কোন মহাসাগর
অরন্য জঙ্গলে কুহকের ডাক শুনিনি
ভেসে বেড়ানো পাখিদের মেলা দেখিনি।
আমি পল্লী গাঁয়ের এক চাষার ছেলে
বনু হরিণ দেখার সময় কোথায় বলো?
আমি দেখি! প্রতিনিয়ত দেখি!
লাঙলের ইশে কৃষকের কান্না
ডুবন্ত ধানে চোখের জলে স্বপ্ন মৃত্যু
আবার জেগে উঠার ভরসা দেখি।
তুমি সুন্দর খোঁজো আকাশের পাতালপুরে
আমি সুন্দর দেখি শিশির ভেজা সকালে
তুমি সংস্কৃতি খোঁজো রংমহলের দেয়ালে
আমি সংস্কৃতি দেখি কৃষকের কাদা মাখা হাঁটুজলে।
এক আমরণ ব্যথা বুকে বেঁধে আছে
কোথায় সেই রেনেসাঁর কবি ফররুখ?
কোথায় সেই পল্লী কবি জসীম?
আবার কখন পুঁথি সাহিত্যে বাজবে হৃদয়ে গান
আধুনিকতার ছোয়া নিয়ে দিবে আহবান!
আমার একদম ভাবনা নেই
পল্লী গাঁয়ের কৃষক ছেলেদের ভাবনা থাকতে নেই
এরা বুঝে মাটি এরা বুঝে মানুষ এরা বুঝে ধর্ম
এরা সাহিত্যের কি বুঝবে?
এই যে মাটি মানুষ ধর্ম ছাড়া সাহিত্য তোমার
ঠুনকো কাগজের ফুল! কি হবে এ দিয়ে?
ছুড়ে ফেলো এসব জড়তার খেলনা!
এসো সত্য সন্ধ্যানী! এসো আলোর দিকে
যে পথ দেখিয়েছে ভাষাবিজ্ঞানী ড.মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ
যে আহবান দিয়েছেন আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ
মিথ্যা কথার ফুলঝুড়ি নিয়ে আর কতদিন?
এসো কল্যাণের পথে! এসো গোঁড়ার দিকে।
তুমি কৃষকের মনের কথা বলো,
মানুষের কথা বলতে শিখো!
কি হবে এত বড় সাহিত্যিকে কিংবা প্রাবন্ধিকে চিনে? উষ্টে খাওয়া ভেজা বেড়াল!
যারা নিজের অস্তিত্ব সংকীর্ণতায় ভোগেছে?
নাকি পৃথিবীর এক আজম্ম পাপে তুমিই দূষিত হবে
অথবা নাম্বার বেশী পাওয়ার লোভে
শিক্ষকের অশালীন বাক্যগুলোই শুনে যাবে?
এই তোমার শিক্ষা! আমি ওসব বুঝবো না!
কৃষকের ছেলেদের এতসব বুঝতে নেই
এরাতো মূর্খ? গোঁড়ামী ধর্মকর্ম ছাড়া কি বুঝে?
তিনবেলা পেটভরে খাওয়া ছাড়া কি আছে ওদের?
এরা ডায়েট জানে? এরা সাহিত্য বুঝবে?
তোমার ডায়েট করা সাহিত্যে দুর্গন্ধ ছড়িয়েছে
তোমার নষ্ট কবিতা বিলাস নষ্ট করছে পৃথিবী আমার
তুমি নারী মদ নিয়ে মত্ত হয়ে আমার অঙ্গনে এসেছো
তুমি পাপী! তুমি নষ্ট করেছ আমার সোনার ফসলকে
হে পাপিষ্ঠ তুমি চলে যাও! দূর হও আমার অধিকার থেকে।
জেগে ওঠো তরুণ! জাগো রাখালী কিশোর
সিরাজুম মুনিরা তোমায় হাতছানি দিয়ে ডাকছে
পল্লীর মায়েরা সব আলো নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে
নতুন অঙ্গনে রচনা কর! হও তুমি পুঁথিরাজ
এ যে তোমার, তুমিও যে তার!