শেষ বাসের অপেক্ষায় ক্লান্ত অবসন্ন দেহ
জাগতিক সকল খাটুনি শেষে শ্রান্তির পথে।
শেষ সীটের জানালার ফাঁক গলে এ শহরের দূষিত হাওয়া,
চোখে-মুখে অদৃশ্য ধূলোর দল
শেষের পথে এরা আমার নিত্যকার সঙ্গী।
দুর্দান্ত গতিতে ছুটে চলা শেষ এই বাস,
শেষ জানালায় লাগাতার অস্পষ্ট আওয়াজ-
ঘূর্ণি হাওয়ায় মিশে অপূর্ব সুরের মুর্চনা;
পৃথিবী ভুলানো মনোমুগ্ধকর মন্ত্রের মতো।
এসব সুরের ভাষা আমি বুঝি না;
জানালারও কি নিজস্ব কোনো ভাষা আছে,
কিংবা দূষিত এই হাওয়ার?
বিবর্ণ নগরীর ধূলোকণারাও কি কিছু বলতে চায় আমায়?
শেষ স্টপজে দুর্দান্ত গতি শূণ্য হয়
আমি ঘরে ফেরার পথে পা ফেলি;
শেষ জানালাটা কি আমায় পিছু ডাকে; কিংবা শেষ সীটটা?
এদের সুরের ভাষা বুঝিনা ঠিকই;কিন্তু আমি জানি
সমস্ত দিনেইতো কতজনের সঙ্গ পেয়েছে এরা
শেষের বেলায় একলা হওয়ার যন্ত্রণা সইতে পারেনা,
শেষের এই যাত্রীকে এরা ধরে রাখতেও জানে না।
সমস্ত রাত কেটে যায় তন্দ্রাচ্ছন্ন ঘোরের মাঝে,
দুচোখে ঘুমপরী সাঁতার কাটে; তবু ঘুম আসে না!
শেষ বাসেই প্রথম বাস হয়ে ফিরে আসে
আমি প্রথম বাসের প্রতীক্ষায় থাকি!
শেষ বাসের শেষ সীট কিংবা শেষ জানালাটি আর জানতে পারে না,
জীবন ও জীবিকার মোহ মানুষের পিছু ছাড়ে না।