আমার ভেতরে এক নারী বাস করে
তার ভেতরেরটা আমার চেনাজানা,
যেন পরিচিত কোন পার্কের দাগ কাটা রাস্তা
সে হাঁটে পায়ে মিলিয়ে পা, আমি হাঁটি
সে হাসে কণ্ঠে মিলিয়ে কণ্ঠ, আমিও হাসি
তার বিছানা বালিশ চাদর বড্ড পরিপাটি।
আমার ভেতরে এক নারী বাস করে-
তাকে আমি দেখতে পাই না
ছুঁতে পাই না;
আবছায়া দেখে দৌড়ে ছুঁটে যাই না।
পুরুষের অন্দরে থাকে যে নারী,
পর হলেও কখনো ছাড়ে না ঘর।
ভোররাতে আচ্ছন্ন মন ও মগজ ভারী হয়ে উঠলে-
প্রতিযোগিতা শুরু হয় ঈশ্বরের সাথে;
মুয়াজ্জিন দিনে ডাকে পাঁচবার,
আমারও তো ইচ্ছে হয় শুধু একবার
খাটো স্বরে কানেকানে জপে দেই বীজমন্ত্র!
কান্না পেলে আমার ভেতরের নারী কেঁদে উঠে,
কেননা পুরুষ কাঁদতে পারে না।
আমার ভেতরে যে কবি শব্দে দিচ্ছে বুনট
অকাতরে বিলিয়ে দিচ্ছে দু:খ-বিলাস,
আদ্যোপান্ত বুঝেনি যে, শিখেছে কেবল শব্দ গোটাকতক!
সত্যিকারের সুখের বানানে শুরুতে দন্ত-স; জানে না সে,
জানলে একদিন মস্ত করে লিখত সুখ-কাব্য।
সুখপাখী আকাশে উড়ে না
ঝিম ধরে বসে থাকে মনের উঠানে-
যেন একটু ওম রোদ পেলেই পাখনা ঝাড়া দিয়ে উঠবে।
আমার ভেতরের নারী বালুচরি শাড়ি পড়ে,
পাড়ের আঁচল পানিতে ভিজিয়ে, কপালে ও সিঁথিতে লাগিয়ে দেয়ালের সাদা চুন
চিনি হাঁসের পালক ধরে উড়িয়ে দিয়েছে শরতের মেঘ।
আমার ভেতরে এক নারী বাস করে-
আবাদ করে অনাবাদী জমি,
সে আমার হাত ধরে - ধরেই থাকে শক্ত করে;
হাতের মধ্যেই রাখছে যেন একটি ঋদ্ধ পুরুষ।