জন্মভূমি দয়াকান্দা
মেঘনার পাড়ে আমার বাড়ি
দয়াকান্দা নাম তার কারো সাথে নাই আড়ি
নদীর সাথে যুদ্ধ করে বেঁধে রাখি ঘর
আপন যারা ছিলো আমার সবাই হলো পর।
মা বাবা ভাই বোন এই তো পরিবার
আত্মীয় স্বজন পাড়া প্রতিবেশী মিলে সমাজ সংসার
কিছু দুঃখ কিছু সুখ কিছু হাসি কান্না
বড়ো পরিবার মোদের, এক হাড়িতে হয় রান্না।
দয়াকান্দার চারদিকে নদী
দূর থেকে দেখলে মনে হবে নদীর মাঝে কোনো তরী
দয়াকান্দার বালুর চর
কত স্মৃতি মনে পড়ে হয় সরবর।
গাঁয়ের পাশে আছে বীল
স্মৃতিগুলো ভেসে উঠে দিতে পারি না খিল
দয়াকান্দার পশ্চিম পাশে মরিছখালী নদীর কথা
ভুলতে পারি না, স্মৃতি গুলো বাড়ায় কেবল ব্যথা।
শৈশব কৈশোর মধুমাখার কাল
কেমনে ভুলে যাই বলো দয়াকান্দার সেই খাল
মেঘনা- মরিছখালি দুই নদীর সংযোগস্থল
গ্রীষ্মে শুকাই যেতো, বালু মাটির পরিতো স্তর।
দয়াকান্দার বাজার জমতো গাঁয়ের পূর্বপাড়ায়
মেঘনার তীরে, বট বৃক্ষের নীচে বালুকাময় জায়গায়
সকাল সন্ধ্যা বেঁচা কেনার চলতো হরদুম
লোকেলোকারণ্য হয়ে জমজমাট হইতো একধুম।
কাঁচা সরু রাস্তা কখনো ক্ষেতের আইল ধরে একান্তে
হেটে যেতো লোকে দূর দূরান্তে যার যার গন্তব্যে
এ পাড়া থেকে ওপাড়া গাঁয়ের ভিতরে ছিলো রাস্তা
বর্ষা ক্ষণে সাঁকু, খেয়া তরী, নৌকাই ছিলো আস্থা।
হা ডু ডু, কাবাডি, গোল্লাছুট আরো কত রকম খেলা
লোক গীতি, বাউলগান, গল্প, আড্ডা, উরসের মেলা
সাড়া বছর থাকতো জমে হিন্দু মুসলিম পাড়া
মনে পড়ে আজ বড়ো বেশি, কেঁদে কেঁদে হই সাড়া।
আর কি পাবো ফিরে স্বাদের এমন জীবন
যেথায় মিশে আছে আমার দেহ মরন
দয়াকান্দার মাটি, সবুজ শ্যামল সুন্দর গ্রামখানি
ফিরে যেতে চাই বারে বার, এ যেনো বাংলার রানী।