১.
যখন আঁধার নামে
ঘরের ছাউনি তে আমার।
সরু সলতে প্রদীপের,
খোরাকি সাবাড়ে---
কেমন নুইয়ে পড়ে অবশ।
ছেয়ে যায় আঁধার, পূর্ণিমার আলো যেন হারায়
মনমরা ধূসর হওয়ায়।
চোখ খোলা ও বুজায় থাকেনা তারতম্য তেমন। কাউয়া ও কোকিলের গতর করে সলাজে আলিঙ্গন।
অমারজনী শরীর বিকিয়েছে দ্বার কৃষ্ণগহ্বরে।
ছায়া দেখি না, কোথাও নিজের -
ফিনকি দিয়ে পড়ে না আধটু আলো।
২.
বাঁক নিয়ে চিন্তার সরণি আমার
পিঠ উল্টে পথ বেছে দেখো করে গমন।
সুদীর্ঘ পেখম ঝাপটে, বাতাসের 'পরে রেখে
দেহখানি, ভাসানে
বিগত দিনে খুঁজে একরত্তি জহরত,
বা মাখো সৌরভের কর্ম শিল্পের কোনো।
চিলের চোখ দুটি দিও
প্রিয়তমা, সুতীক্ষ্ণ প্রখর।
ভাবনার তরু ডানায় সওয়ারী হয়ে যুগান্তর।
মেঘের সাথে পাতানো সন্ধিতে
উড়ে বেড়াই আকাশের পর আকাশ।
হয়তো কেউ কোথাও প্রস্তুত করে
সৈণ্যের কাতার।
ছাড়াবে মেঘের খোলস, ঝরঝর জলকণায়।
৩.
রুহের কোমা ভেঙ্গে কাঁচা ঘুমের মতন
এই আমার দেহ,
আত্মা সমেত পৃথিবীর কপাট খুলে -
অবনত মস্তক বেড়ে চোখসজল
ধরণীর বুকে গজায় একটি প্রাণ।
অংশী হই বাতাসের দেয়া-নেয়া শ্বাসের খেলায়।
উদোম শরীর ঢাকে আরামের সেলাই কাপড়।
দেহের বছর হতে করো বিয়োজন চার কি পাঁচ। তারপর নরম চারা হতে মুকুল,
আমার বোধের বয়স শুরু...
বুঝিলাম, আমি কারো রক্তের স্বজন।
বুঝিলাম, আমার জন্য রাত্রি প্রহর কেউ করে সুখের তালাশ।
বুঝিলাম, কম্পাস ছলনায় আমি যেন সাগরের অজানা তীরে নোঙ্গর ফেলা কোন নাবিক,
ভুল ঠিকানায় কড়ানাড়া বেশরম পথিক।
৪.
নারী তুমি চাও না
কেউ বসাক ভাগ এক তিলক।
আদর-স্নেহে সাজানো বাগানে
কেউ এসে বোঁটা ধরে আগলে দেক
ফুলের বন্ধন তরু।
তবে, থাকে কি দোষ কোন সন্তানের?
চায় যদি সে পিতার শাসনে আদর,
তাঁর শরীরের ঘ্রাণ বহুক সন্তানের কোমল নাক।
কেউ কি করে বহন হেসেখেলে পিতার মতো অমন?
দড়ি ছেঁড়া বাছুর আর রাখাল ছাড়া গরু
বুঝো, তার গতিপথ কোন পথে হারায়!
বোধের পয়লা আঘাত হেনেছিল বিভীষণ, সজারুর কাঁটাসব বিঁধে গিয়ে হই বিবসন।
৫.
এক এক করে বোলতা
সাজায় চাক, বাঁধে ঘর
ফুলেফেঁপে আন্ডা বাচ্চায় ক্ষয়হীন সংসার।
চাওয়া কোন আমার পূরণ!
সেতো অরণ্যে করা ব্যর্থ রোদন
শরীর মচকে কতো বিকল কলকব্জা
ভেঙে লুটপাট হয়নি কখন।
দ্বারে দ্বারে ঘুরে শূন্য হাত দুটি আমার
ভরেছি অশ্বডিম্বে হাজার।
কোথাও কিচ্ছু নেই, ধু ধু বালুচর
মরীচিকায় খেই হারানো মরূচর ।।