** সপ্তক্ষরা বৃত্তি বা ৭ বৃত্তি : যেসব সংস্কৃত ছন্দের প্রতি চরণে ৭ টি অক্ষর বিদ্যমান তাদের ষড়ক্ষরা বৃত্তি বা ৭ বৃত্তি বলে।

** গঙ্গাদাস সূরীর ছন্দোমঞ্জরী অনুসারে সপ্তক্ষরা বৃত্তির ছন্দ আটটি (৮)। এখানে থাকছে ২ টি। বাকিগুলো পরবর্তী পর্বে।

** আজকের এই অধিবেশনটি উৎসর্গ করছি আমার স্নেহময়ী কবি জলি রানী সূত্রধর বোনমণি কে। স্নেহময় ভালোবাসার স্মরণে নিবেদন করলাম।


** ছন্দালাপ**
১. সংস্কৃত মধুমতী ছন্দ: গণ তিনটি (ন ন গ)
গঠন :
সংস্কৃত রীতিতে : লঘু গুরু লঘু লঘু লঘু লঘু গুরু
বনেদী ছন্দে     :  মুক্ত বদ্ধ মুক্ত মুক্ত মুক্ত মুক্ত বদ্ধ
আধুনিক বাংলায় : তা ধিন তা তা তা তা ধিন
প্রতীক: v s v  v v v s  বা  | – |  |  |  | –
উদাহরণ:
সংস্কৃতে :
রবীদুহিতৃতটে বনে কুসুমততীঃ
ব্যধীত মধুমতী মধূমদনমুদম্।
(ব্যাখ্যা :
র/ল, বী/গু, দু/ল, হি/ল,  তৃ/ল, ত/ল, টে/গু
ব/ল, নে/গু, কু/ল, সু/ল, ম/ল, ত/ল, তী/গু
ব্য/ল, ধী/গু, ত/ল, ম/ল, ধু/ল, ম/ল, তী/গু
ম/ল, ধূ/গু, ম/ল, থ/ল, ন/ল, মু/ল, দম্/গু)
বাংলায় :
ভজন  ভুলে  আরাধন,
সাধন ডাকে নাহি ক্ষণ।
সহায়  তুমি  সুধী-জন
সুপথ পথে রেখো মন।

জীবন  সপিয়ে  দিলাম,
তোমায় স্মরণ  নিলাম।
কালের পাটুনী  আমার,
এ মন  সকলি তোমার।

(উল্লেখ: বাংলা উদাহরণে প্রতিটি চরণ -
    তা ধিন তা তা তা তা ধিন এ বিন্যস্ত)

২. সংস্কৃত কুমারললিতা : গণ তিনটি (জ স গ)
গঠন :
সংস্কৃত রীতিতে : লঘু গুরু লঘু লঘু লঘু গুরু গুরু
বনেদী ছন্দে     :  মুক্ত বদ্ধ মুক্ত মুক্ত মুক্ত বদ্ধ বদ্ধ
আধুনিক বাংলায় : তা ধিন তা তা তা ধিন ধিন
প্রতীক: v s v  v v s s  বা  | – |  |  |  –  –
উদাহরণ:
সংস্কৃতে :
মুবাবিতনুবল্লী কুমারললিতা সা
ব্রজৈণনযনানাং ততান মুদমুচ্চৈ।
(ব্যাখ্যা :
মু/ল, বা/গু, বি/ল, ত/ল,  নু/ল, বল্/গু, লী/গু
কু/ল, মা/গু, র/ল, ল/ল, লি/ল, তা/গু, সা/গু
ব্র/ল, জোই/গু, ণ/ল, ন/ল, য/ল, না/গু, নাম্/গু
ত/ল, তা/গু, ন/ল, মু/ল, দ/ল, মুচ্/গু, চোই/গু)
বাংলায় :

হৃদয়        দহনে হই ছাই,
ব্যথায়     তথাপি সুখ পাই।
দু-চোখ    কাঁদে যে টপটপ,
আবেগ      উথলি ঝপঝপ।

শিমুল     করেছে লাল বন,
জ্বালায়    ভরেছে এই মন।
বিবাদ     রচেছে শুন-শান,
বাসর        গড়েছি অম্লান।
(সন্তাপ / কবি কোমল দাস)

(উল্লেখ: বাংলা উদাহরণে প্রতিটি চরণ -
  তা ধিন তা তা তা ধিন ধিন এ বিন্যস্ত)

পরবর্তী পর্বে ----