কোনো এক ভোরে ফজরের আগে,
রুহ্ সুখী হোক দেহ ত্যাগে,
মালাকুল মউত আসুক পাশে,
সইমান যেন মরি, হৃদয় তো তাই আশে।
আমি মেনে নিতে চাই সে মরণ,
প্রভুর সন্তোষভাজন হয়ে কবরদেশে চাই শরণ!
হয়ত দেখা হবে না যামিনী নিঃশ্চুপ,
জোছনায় ভরে থাকা রজনীর রূপ!
হয়ত শোনা হবে না কোকিলের গান,
হয়ত পাব না ফাগুনের পবনে দোলা কুসুমের ঘ্রাণ,
হয়ত ধরণীর বুকে আমার মতো কাঁদবে না কেউ,
শালিকের সুখে হৃদয়সাগরে কারো উঠবে না ঢেউ!
হয়ত ঘাসের অনাবিল সুখ কবিতায় কেউ খুঁজবে না,
হয়ত আমারি মতো কেউ কবিতায় বৃথা যুঝবে না!
হয়ত আমারি মতো কাহারো চোখ
দেখবে না ছেড়ে যাওয়া মেঘেদের শোক!
হয়ত আকাশের পটে তারার মেলা
দেখে কারো কাটবে না নিশিবেলা!
বৃষ্টির ফোঁটা পড়া দেখে
ক্ষণিক সুখের রঙ মেখে
হয়ত-বা কেউ বাতায়ন আর খুলবে না,
জীবনানন্দের তরে কবিতায় সুখ তুলবে না!
হয়ত কারো জীবনের কোনো এক বিকেলবেলা,
কাটবে না দেখে মেঘেদের ধরাধরি খেলা!
বিশ্বপ্রতিপালকের যদি হই সন্তোষভাজন,
রাজি তবে চলে যেতে শীঘ্রই পরপারে।
আক্ষেপ নেই, যদি না হই তাঁর বিরাগভাজন,
মৃত্যুতাক সসত্য রয়ে যাই যদি তাঁর দরবারে!
আধুনিক যুগ, আমি বলি বর্বর
আপনজনেরে করেছে যেন পর-পর!
যুগের হাওয়ায় মেতে
সকলে চাচ্ছে হায়া খেতে!
কবিতা ভালোবাসবে কি কভু তারা?
হৃদয় আছে তবুও তারা হৃদয়হারা!
কখনও মনে হয় এই যুগের পরে
প্রিয় এই মায়ামাখা ধরণীর 'পরে
কবিতা আর থাকবে না, হবে তা কবিহীন!
হৃদয়ধরণী দিব্যি রবে, শুধু হবে সে রবিহীন!
আমার প্রয়োজন ফুরিয়েছে জানি
তবু মন আজিও বড় অভিমানী
মনের পট হতে লেখা আসে,
তা কখনও বা কাঁদায়, কখনও ভালোবাসে!
কাব্যের অন্তঃসলিল প্রবাহে ডুবি দুঃখ নাশিবার তরে,
মনের খিদে মিটায়ে ক্ষণিক প্রশান্তিতে এ হৃদয় ভরে!
আমি কি বলেছি কোনোদিন কোনো পলে
'কবি আমি, সদা ডেকো মোরে কবি বলে'?
.... সেখ আজমাইল
গলাতুন, মন্তেশ্বর, পূর্ব বর্ধমান
১৬.০৮.২০২১, ভোর পৌনে চারটে