শ্রেয়সী, তুমি আমায় ভুল বুঝো নাকো আর
চলে এসো এই খড়ি গাঙে আবার!
শ্রেয়সী, জানো, আমার হৃদয় এখন শুকনো মরুভূমি
জলকষ্টে ভুগছি বহু দিন ধরে।
কেউ নয়, শুধু তুমিই মেটাতে পারো এই তৃষ্ণা!!

শ্রেয়সী, এসো, দেখি আর‌ও একবার হিজলের সুখ
আর‌ও একবার হাতে হাত রেখে ঘুরি চলো!
তোমার মান ভাঙানোর আপ্রাণ চেষ্টা করব,-
শুধু একবার চলে এসো।
বুকে নয়, পাশে এলেই হবে!!

শ্রেয়সী, এসো, আর‌ও একবার
তোমার হাতে এঁকে দেব এই জগৎ!!
দেখি চলো মুতোঘাসের সুখ,
পাথেয়-না-লাগা রাস্তায় এসো একটু ঘুরি!!
এসো আর‌ও একবার ফারহাদ হ‌ই,
তুমি সিরি সেজে উঠবে ক্ষণিকের জন্য!!

আজ রাতের আকাশ দেখলে লোভ হয়,
তারার সুখ দেখে হিংসে হয়।
তুমি ছাড়া এ আকাশ বৃথা,
এই অমূল্য চাঁদের আলো অ-মূল্য আমার কাছে!
শ্রেয়সী, এসো আর‌ও একবার হাতটি ধরে চলি।

তুমি জানো, খড়িনদীর মাঝিটা এখন মৃত্যুশয্যায়,
মনে আছে আমাদের নিয়ে সে গোটা নদী অবলীলায়
চষে বেড়াত!!
তার ছেলেদের আর্তনাদ যদি দেখতে...
আমার জন্য না হলেও তাদের জন্য
একবারটি আসবে না কি?

এখন, বর্ষার দিনগুলো অর্থহীন মনে হয়,
তুমি গবাক্ষের বাইরে হাত বাড়িয়ে বৃষ্টি ছুঁতে,
মনে আছে?
শ্রেয়সী, তুমি শ্রেয়সী হয়ে আর‌ও একবার ধরা দাও!!
খেঁকশিয়ালের বিয়ে হ‌ওয়া দিনগুলো আমার কাছে
মূল্যহীন মনে হয় এখন!
এখন একটি ছাতার নীচে দু'টি মাথা দেখলে
আমার মন হুঁ - হুঁ করে কেঁদে ওঠে!!

শ্রেয়সী, তুমি আর ভুল বুঝো নাকো আমায়,
আর‌ও একবার চলে এসো,
মনে করো ফাঁসির হুকুম হ‌ওয়া কয়েদির
শেষ ইচ্ছা পূরণ করার দায়ভার তোমার ওপর!!
শ্রেয়সী, শেষ অনুরোধটুকু রাখবে না?

শ্রেয়সী, আমি মৃত্যুশয্যায়‌ও তোমার প্রতীক্ষা
করে যাব...
যদি আমি কবি হতাম, কবিতার পর কবিতা
শুধু তোমার নাম নিয়ে লিখতাম!!
জানি না, তখন‌ও তোমার মান ভাঙত কিনা!

আজ লোকের কাছে শুনি,
আমি নিলাজ, বেহায়া, কানকাটা কুকুর: আর‌ও কত কী!!
আমি প্রতিশোধে নয়, আপোষে বিশ্বাসী,
শ্রেয়সী, তোমার জন্য আমি আমার ব্যক্তিত্ব
বিসর্জন দিতেও দু-বার ভাবব না!!

শুধু তোমার জন্য সবকিছু, শ্রেয়সী!
এই অকবির পাতে পড়ার অযোগ্য
কবিতাগুলো তোমার‌ই জন্য!!
কারণ তুমি চলে যাওয়ার পর থেকেই
এগুলো ধরে বেঁচে আছি!!

শ্রেয়সী, তুমি আর ভুল বুঝো নাকো আমায়,
পুনরায় শ্রেয়সী হয়ে ধরা দাও
এই মূর্ছিত হৃদয়ের বামপাশে!!
ফিরে এসো আরও একবার!!
শ্রেয়সী, তুমি সুরঞ্জনার মতো হ‌য়ো না!!
            ... সেখ আজমাইল
            ২৩/০৪/২৩, ১১:৩৪, গলাতুন - ৭১৩১৪৫