আমার বুকে প্রত্যহ বাজে পথশিশুদের কান্না,
ষ্টেশন চত্বরে কত শিশু মেঝেয় পড়ে থাকে লুটিয়ে!
কতকাল তারা খাইনিক' আপন মায়ের রান্না,
শীর্ণ শরীরে জীর্ণ কাপড়ে একপাশে থাকে গুটিয়ে।
আমি দেখেছি তাদের চাহনি করুণ,
শুনেছি তাদের সকাতর অনুরোধ।
হুংকারিয়া যতই বাবু নাকচ করুন,
একটুকু তাদের নেই অপমানবোধ।
বুঝিনু, পেটের জ্বালায় মরছে যারা,-
তাদের যদি শোনাও দু'চার কথা,
পরক্ষণেই হবে তারা আনন্দে আত্মহারা,
যদি মোছো তাদের ক্ষুধার কঠিন ব্যথা।
দেখেছি কত ক্ষীণতনু নর সানগ্লাস পরে
পছন্দের ম্যাগাজিন কেনে হাতে সিগারেট ধরে!
দেখেছি কত অর্ধনগ্না নারী,
পার্কিং করে নামিদামী গাড়ি!
দেখেছি কত শহুরে আধুনিকা,
বুদ্ধি বেচে চালান জীবিকা।
দেখেছি তাদের পথশিশুদের করছে তিরষ্কার,
বঞ্চনা করে গঞ্জনাভরে দিতেছে পুরষ্কার!
এরাই নাকি বোঝাতে চায় মনুষ্যত্ববোধ,
টাকা দিয়ে এরাই করে মাতৃধারশোধ!
বিশ্বাস যদি না হয় মোরে, দেখে এসো বৃদ্ধাশ্রম ঘুরে
পিতৃমাতৃশরণস্থল দিয়েছে অপমানের চাদরে মুড়ে!
চারিদিকে দেখি মেকি মানবপ্রেমীদের পঙ্গু মানবতা!
অমানুষেরা শেখায় যদি কেমনে মানুষ হয় হতে,
স্বার্থান্বেষী জেনেও তাদের কেমনে আমি মানব তা?
সুখতরী মোর নাই-বা থাকল জীবননদীর গতিপথে!
জাহান যদি লালচোখে তাকায় আমারই আঁখিপাতে,
আমি তবুও কভু মেলাবো না হাত অমানুষের সাথে!
আবারও একদিন পাব নবযুগের নবারুণের দেখা,
স্মৃতির পটে ফের উঠবে ফুটে সুখের স্মৃতিরেখা!
.... সেখ আজমাইল
গলাতুন, পূর্ব বর্ধমান
২১.০৫.২১, শুক্রবার, রাত্রি ১:৩০