ভালোবাসি আমি ভেবেছিনু যারে
চলিয়া গিয়াছে সে ছাড়িয়া আমারে
বহুদূরে, সে অনেক যোজন দূর!
ভুলিয়া গিয়াছে সে আমারে
যে আমি ভালোবেসেছিল তারে
তার বুকে বাজে সুখের গানের সুর॥

সে কোমলমতি, হৃদয়হীনা অপরূপা
তারে ভালোবেসেছিনু, সে শতরূপা!
সে আয়তলোচনা-গজদন্তিনী কামিনী।
তার ডাগর ডাগর আঁখির মাঝে
আমার হর্ষধ্বনি বাজিত সকাল-সাঁঝে
সেঁজুতি সে, তার সনে কাটাতে চাই আমি সকল যামিনী॥

মুছে যাক মোর হিয়ার ক্ষত
যাক সে আরও দূরে।
বেদনা আমার আছে যত
যাক মুছে আজি বিরহ-গানের সুরে।
কারে ভালোবেসেছিনু আমি!
হায়, আফসোস! ক্ষমিও মোরে
     হে, অন্তর্যামী!
নিশি কি মোর পরিণত হবে ভোরে?

তার চিবুকের ঐ গাঢ় বাদামী তিল
লয়েছিল কাড়ি আমার এই দিল।
মনে হত সে হুর কোনো জান্নাতি
সুবাসে মুখরিত করে আমার সকল রাতি।

আজ আমি তার মৃত্যুর অপেক্ষায় আছি
প্রভুর কাছে তার যত দুঃখ যাচি।
দূর হয়ে যাক সে এই ভব হতে
ভেসে যাক সুখ তার দুঃখের স্রোতে।
স্বার্থপর সে, চলে যাক দূরে
আমা হতে, যাক বহুদূরে।

বলিতে দ্বিধা নেই সে রূপে-গুণে শ্রেয়া!
মম হিয়ার নদে ভাসিয়ে প্রেমের খেয়া
আঁটিল দারুণ ফন্দি।
আমার আমি-রে করিয়া সে বন্দী
চলে গেছে সে বহুদূরে।
তাই সুরে সুরে
গান গেয়ে গেয়ে
শ্রান্ত আমি দাঁড় বেয়ে বেয়ে।
      — সেখ আজমাইল
     — অগ্রহায়ণ ১৫, ১৪৩১, রবিবার
      — গলাতুন, ৭১৩১৪৫