নবুয়তলাভের বয়স পার হয়ে এসেছি সেই কবেই; ভেবেছিলাম--
সবুজদিনের তসবি জপেই কেটে যাবে আমার ধূসর রঙের দিন-
স্বর্গবাসের কথা ভেবে ভেবে যেভাবে কেটে যেতো নির্বাসিত আদম-
হাওয়ার। লং ড্রাইভে যাওয়ার ফুয়েল নেই এমনটা ভেবে পুরোনো
কলকব্জার দীর্ঘশ্বাস শুনতে অভ্যস্ত হয়ে উঠ্ছি-আর তখুনি,- হে নবীর
দেশের মেয়ে, আকাশ থেকে নেমে উর্ফার মাটিতে তোমাকে পেলাম
তরুণ-তুর্কি হাওয়া! তোমার ছোঁয়ায় জেগে উঠলো প্রত্যাবৃত্ত যৌবনের
প্রমত্ত প্রবাহ; এখন আমার নবায়িত যৌবন পাহাড়ী বন্যার মতন ভিজিয়ে
দিতে পারে আঙুরের ক্ষেত ভেবে তোমার যৌবনের আনাচ-কানাচ;
বহুব্যবহৃত তোমার তুর্কি ঠোঁটে আমার বঙ্গীয় ঠোঁট এঁকে দিতে পারে
ওয়াটার-কালার এমবোস কিস; ঠাণ্ডা আপেলের রস নয়, আমার অধরে
প্রবাহিত গন্দমফলকে হার-মানানো ল্যাংড়া আমের সঘন স্বাদ যা
সহসায় উপচে তুলতে পারে- তোমার প্রাণের পেয়ালা; তুমি যদি
পারতে---হাওয়ার মতন দুঃসাহসী হতে, তবে বাথটাবের সীমিত স্নান
রেখে, তোমাকে নিয়ে নাও ভাসাতাম পদ্মা-যমুনার মিঠাপানির মোহনায়।
হে গাজীর দেশের মেয়ে, আমি জানি তুমি আমার সোনার বাংলা হবে না;
সহযাত্রীদের রাক্ষসমূর্তি চোখের পাহারা ছিল বলে টুকে নিতে পারিনি
তোমার পোস্টাল ঠিকানা কিংবা ই-মেইল অ্যাড্রেস; আর সেলফোনটি তো
তুমি তোমার হৃদয়ের সাথেই সযত্নে রেখেছিলে উভেন উলের আড়ালে;
জানো, ভালোবাসার প্রতিপক্ষ সবাই; আর আমি এও জানি,---তোমার প্রতি
আমার এই অনুরাগ- স্টাডি ট্যুরের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়; তবু হে তুর্কি যুবতি,
অসম্ভবের পথের মোড়ে স্বর্গীয় ভুলের মতো তোমার হাতখানা হাতে নিয়ে
সন্দেহপরায়ণ কটি ক্যামেরার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ‘হারান’-এর কিংবদন্তীর
নকল রাজা সেজেছিলাম; পাশেই তুমি দাঁড়িয়েছিলে রানি। অনুরাগ অথবা
বিরক্তির প্রচ্ছদে এ ছবি বহুদিন আঁকা থাকবে তোমারও মনে---
ভেবে ভেবে সুখের সঞ্চয় জমা হবে আমার বেহিসাবের সঞ্চয়ী হিসাবে।
আমাকে পর অথবা আপন ভাবতে পারো; অথবা কোনোটাই নয়। আর
এটাই সত্য যে তোমার দেশের বীরের বৈশিষ্ট্য মিশে আছে আমার যৌবনের
ফল্গুধারায়; আর্কাদাস হই বা না হই, আমি তোমার কার্দেস তো বটে!
হায়, তোমাকে এইসব বোঝানোর সময়ও পাবো না; অতএব, ভালো থেকো
হে পুরোনো আত্মার আত্মীয়। আরেকটি কথা-আমার এ-চোখ হয়তো এতটা
মুগ্ধ হওয়ার সুযোগ পাবে না আর। নাজিম হিকমতের মতন জেল খেটে
যাবে বিভেদবৈরী দুরন্ত বাসনা; তবু আমার শুভকামনার মেঘ দেশান্তরের
বৃষ্টি হয়ে তোমার অস্তিত্বের আঙিনায় গড়ে তুলবে ভালোবাসার বাগান।