বাবা, সে কতদিন হয়--তোমার পা পড়ে না আমাদের এই সোনালি উঠোনে-
যা তুমি নিজহাতে গড়ে তুলে---দূ..রে.. চলে গেছো ছিঁড়ে ফেলে অভিকর্ষের
যাবতীয় টান! তোমার পায়ের শব্দে চমকে উঠতো যে-সূর্য- “এই বুঝি
দেরী হয়ে গেল!”,---সে এখন আগের মতোই ওঠে বাতাসে ছড়িয়ে দিয়ে
অজস্র সোনার রেণুর ঢেউ; ধানের আলের ঘাসগুলো-মাথায় নিয়ে শুভ্র-
সৌন্দর্যের স্থাপত্য- অপেক্ষায় থাকে পরিচিত দুটি পবিত্র পায়ের; আহ্নিক
গতির ট্রেন যায়--কিন্তু সেই সৌন্দর্য ও পবিত্রতার মহামিলন আর ঘটে না।
আলনার নিচে পড়ে আছে বাদামিরঙের একজোড়া জুতো যেন ড্রাইভারহীন
আধপুরোনো টয়োটা! আমার ইচ্ছে করে-- জুতোজোড়া পায়ে দিয়ে হাঁটতে
থাকি-জমির আইলে, নদীর কিনারে, পবিত্র স্বপ্নের বারান্দায়; কিন্তু ভয় হয়-
আমার পা-দুটি তোমার জুতোর মাপের হলেও তাদের বিচরণের জগৎ
অভিন্ন নয়; তারা তো সিরাতুল মুস্তাকিম চেনে না,--নানা অন্ধগলি ঘুরে ঘুরে
বদনেশায় বৃত্তাবদ্ধ তাদের গতি। আমি ঐ জুতোজোড়া পায়ে দিয়ে যদি
অভ্যাসবশত কোনো অন্ধগলিতে ঢুকে পড়ি, আর অমনি তারা বিদ্রোহ করে
বসে,--“হে নাদান মানুষ, তুমি আমাদের উপযুক্ত নও!” এবং এই বলে খুলে
পড়ে আমার পা থেকে,-- আমি নগ্নপায়ের লজ্জা নিয়ে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবো!