যখন কুঁড়িরা শুকিয়ে জীর্ণশিশু
বিলের কবিতা চৌচির অক্ষরা
বৃষ্টিস্নাত দখিনা মৌসুমী হাওয়া
তখন মধুর প্রণয়ের হরকরা।
যখন জলের যৌবন থই থই
জলদে জলদে জীবন গুঞ্জরিত
তখন নিবিড় খোয়াবের বীজতলা
নবান্নমুখি হাসিতে মুঞ্জরিত।
শুভ্রমেঘের পালকে যখন আঁকা
ব্যাকুল প্রাণের বেদনার জলছবি
ঢোলকবিহীন হৃদয়বেদীতে তখন
আমরা দুজন যুগল-প্রাণের ছবি।
যখন শস্যে উদ্ভাসিত ভূমি
ইঁদুর ব্যস্ত ভূগর্ভস্থ গোলায়
ভালোবাসাঘন নবান্ন উৎসবে
আমরা তখন হিল্লোলিত দোলায়।
যখন হিমের কয়েদি রোদেশ্বর
বুলবুলি খোঁজে নীড়গরমের হাওয়া
ভাপাপিঠার গন্ধে-তাপে তখন
ভালোবাসিবার প্রাঙ্গণটুক ছাওয়া।
যখন কোকিল প্রত্যাগত ঘরে
নতুন শাড়িতে পর্ণমোচীকে চেনা
আমরা তখন প্রণয়ের গুলবাগে
ফোটাই শিমুল পলাশ হাস্নাহেনা।
আমরা পেয়েছি হৃদয়-জলের নদী
কেউ বা সে-জলে ভরে স্বপ্নের ঘট
কারো বা কণ্ঠে উত্তাল ভাটিয়ালি
কেউ বা উদাস মাথায় জমিয়ে জট।
ভাওয়াইয়া বাজে নক্সীকাঁথার মাঠে
সমবেত গানে বটমূলও সুরময়ী
মেহেদিচালিত হাতজড়ানো হাতে
বকুলতলায় আমরা মৃত্যুঞ্জয়ী।
ঝঞ্ঝার মুখেও আমাদের ভার্সিটি
সকালে বিকালে প্রণয়ের পাঠশালা
টিএসসি আজ প্রণয়ের সংসদ
কোরামহীনতা যেথায় রচে না তালা।
যখন ছড়ায় লুটের সূক্ষèজাল
আইএমএফ বা ধূর্ত বিশ¡ব্যাংক
অথবা তৃতীয়বিশে¡র রাস্তায়
গর্জে ওঠে সর্বগ্রাসীর ট্যাংক;
তখনো আমরা হাতে রেখে আর হাত
বজ্রশপথ করে যাই নবায়ন
মুগ্ধ ঠোঁটে ভিড়ে যায় শুধু ঠোঁট
পতাকায় চোখ বন্ধুত্বপরায়ণ।
আমাদের রাত আমাদের যত দিন
নয় তো কেবলি সময়ের সিলেবাস
প্রতিটি সেকেন্ড মিনিট অথবা ক্ষণ
উষ্ণ করিছে প্রেম-প্রণয়ের শ¡াস।
আমাদের নেই পেট্রিয়টের গোলা
বি-ফিফটি-টু লাগবে না কোনোকাজে
অধরে অধরে আমরা রচিলে মিনার
টুইন টাওয়ারও নুয়ে আসে ঘনলাজে।
আমরা মানি না ভালোবাসাহীন দিন
আমরা মানি না ভালোবাসাহীন রাত
বসন্ত অথবা সিডর ঘূর্ণিঝড়ে
প্রেমের বাঁধনে আমরা বেঁধেছি হাত।