পৃথিবীতে বহু দুর্ধর্ষ ভয়ংকর ব্যক্তির
হইয়াছে বহু পূর্ব হইতেই আগমণ।
সামাজ্যবাদী তৈমুর লঙ তাহাদের মধ্যে
অন্যতম জঘন্য ব্যক্তি একজন।
তাহারা এই অনিন্দ্য সুন্দর পৃথিবীকে
দিয়াছে ধবংশের দিকে ঠেলিয়া।
তাহাদের নির্মম অত্যচারে কোটি কোটি
মানুষের প্রাণ গিয়াছে অকাতরে চলিয়া।
তৈমুর লঙের সাম্রাজ্য বিস্তার হইয়া ছিলো
মৃত্যুর মিছিল নরকপুরী কসাই খানা।
এক কোটি সত্তর লক্ষ জীবন প্রদীপ নিভিয়া
গিয়াছিলো তৈমুরের তরবারির আঘাত হানা।
কথিত আছে খোঁড়া পা সুস্থ্যতার জন্য মা
তৈমুরকে দরবেশের কাছে যান লইয়া।
দরবেশ তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে কিছু সময় তৈমুরকে
দেখিবার পর তাহার পা দিলেন কাটিয়া।
মা কান্নারত অবস্থা বিনম্র স্বরে বলিল
সুস্থ্য না করিয়া তৈমুরের পা দিলেন কাটিয়া?
দরবেশ কহিলো দু'পায়ে তৈমুর পৃথিবীকে
ধবংশ ফেলিবে করিয়া।
জৈনেক রাশিয়ান প্রত্নতত্ত্ববিদ খুঁড়িয়া
ছিলো তৈমুর লঙের কবর।
আজব রহস্যময় দুইটি তথ্যবচন বাহির
হইয়া আসিল কবরের ভিতর।
কবরে লিখা "যখন আমি মৃত হইতে উঠিব
জাগিয়া! সারা পৃথিবী উঠিবে কাঁপিয়া"।
কফিনে লিখা "যে আমার কফিন খুলিবে সে
আমার থেকেও ভয়ংকর কাউকে আনিবে ডাকিয়া"।
আশ্চর্যজনক সমাধি খোলিবার দুই দিন
পর হিটলার রাশিয়াতে করিলো আক্রমণ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ হইলো শুরু মানুষের
প্রাণনাশ হইয়া ছিলো পাঁচ কোটির মতোন।
তৈমুর চাগতাই খানাত সাম্রাজ্যের বারলাস
উপজাতিতে করিয়া ছিলো জন্ম গ্রহণ।
বাবা তাহার ছিলো চাগতাই সাম্রাজ্যের
সভা সদস্য একজন।
বিশ বৎসর বয়সে একটি যুদ্ধে তৈমুর
লঙের ডান পা ও হা'তে বিদ্ধ হইয়া ছিলো তীর।
তখন হইতে তাহার হাঁটিতে চলিতে হইত
অসুবিধা নাম হইল তৈমুর লঙ দিগবিজয়ী বীর।
তৈমুর লঙ চেঙ্গিস খানের মতোই যেনো
অসাধারণ রণকৌশলে পারদর্শী ছিলেন।
শত্রুকে ঘায়েল করিবার দুর্বল চিহ্ন যুদ্ধের
বহু পূর্বেই পরিকল্পনা করিয়া রাখিতেন।
ছোট্ট বেলায় তৈমুর একটি চোর দলের
সাথে ছিলো সরাসরি সম্পৃক্ত।
কৃষক ও পথচারীদের টাকা পয়সা করিতো
চোরি, খারাপ অভ্যাস করিয়া ছিলো রপ্ত।
পরবর্তী কালে তৈমুর লঙ সুলতানের
সৈন্যদলে করিয়াছিলো যোগদান।
বহু যুদ্ধ লড়াই করিয়া পারদর্শীতা দেখাইয়া
হইয়া ছিলো বাহিনীর সেনা প্রধান।
অতঃপর একহাজার সৈন্য সামন্ত লইয়া
ইরান করিলেন ভয়ংকর আক্রমণ।
ইরান বিজয়ের পর বাড়িয়া গেলো সম্মান,
পতিপত্তি শুরু হইলো উপরে উঠিবার উড্ডয়ন।
মঙ্গোলীয়দের মধ্য তৈমুরের বাড়তি প্রাধান্য
দেখিয়া চাগতাই সম্রাট তাহাকে দিলো বাঁধা।
যুদ্ধে সম্রাটকে হত্যা করিয়া চাগতাই সাম্রাজ্য
করিলো দখল হইলো অভিষেক অলুক ধাঁধাঁ।
একের পর এক মধ্য এশিয়ার সমস্ত রাজ্য
দখল করিয়া শাসন ক্ষমতা করিলো গ্রহণ।
ভারত বর্ষে তুঘল সম্রাট নাছির উদ্দিনকে
পরাজিত করিয়া মসনদে করিলো আরোহণ।
তৈমুর লঙের অত্যচারে জনগণ অতিষ্ঠ
হইয়া উঠিয়া করিয়া ছিলো বিদ্রোহ।
বিদ্রোহ দমণ করিতে এক লক্ষ জীবন্ত
মানুষ মারিয়া ছিলো দুর্ধর্ষ তৈমুর লঙ।
চেঙ্গিস খানের বংশোদ্ভূত না হওয়া "খান
উপাধি" না করিতে পারিলেন গ্রহণ।
তৈমুর লঙ বিশাল সামাজ্যের অধিকারী
সত্যেও উপাধির জন্য ভারাক্রান্ত ছিলো মন।
মধ্য এশিয়া দখল করিবার পর তৈমুর
লঙ সদূর চীনের দিকে করিলো দৃষ্টি নিক্ষেপ।
নির্ধারিত সময় শীতকালে যুদ্ধরত অবস্থা
দীর্ঘ সময় জ্বরে ভোগিয়া নিভিল জীবন প্রদীপ।
দিগ্বিজয়ী বীর তৈমুর লঙ জ্বরের
প্রকোপে করিলো মৃত্যুবরণ।
কালো কফিনে করিয়া জন্মস্থান হইতে
পঞ্চাশ মাঃ উত্তরে করিয়া ছিলো দাফন।
জুন২৭, ২০২১