প্রাচীন সভ্যতার কালজয়ী অনবদ্য
নিদর্শন চীনের মানব প্রকৌশলে সৃষ্ট মহাপ্রাচীর।
সম্বলিত দৈর্ঘ্য যেন তার বিষুব রেখার
অর্ধেকের চেয়েও বেশী এ পৃথিবীর।

প্রাচীন যুগের গণচীনে সামরিক
সুরক্ষা মহাপ্রাচীর বিশ্বঐতিহ্য ও চীনের গর্বের প্রতীক।
বিভিন্ন রাজ বংশীয় আমলে উত্তর
চীনের পনরটি অঞ্চলের প্রাচীর যৌগিক।

সাতাশ শত বছরের পুরানো চীনের  
মহাপ্রাচীরের প্রথম অংশ যাহা নির্মিত।
খ্রিষ্টপূর্ব সাতশত সত্তর থেকে দুইশত ছিয়াত্তর সালে
রাজ্যে প্রাচীর তৈরী হয়েছিল সমাপ্ত।

কিন শি হুয়াঙ খ্রিষ্টপূর্ব দুইশত একুশ
সালে মধ্যচীন একত্রিত করে কিন সাম্রাজ্য গড়ে।
কিন সাম্রাজ্যের পূর্বে ছোট্ট রাষ্ট্রগুলো
বহিঃশত্রু ঠেকাতে মহাপ্রাচীর তৈরী করে।

কিনকে তখন এক যাদুকর বলে ছিল
উত্তর রাজ্যের যাযাবর করবে তাকে ক্ষমতাচ্যুত।
তাই খ্রিষ্টপূর্ব দুইশত বিশ থেকে দুইশত
সাল পর্যন্ত প্রচীর সংযোগ করে ব্যষ্টিত।

বর্তমান মহাপ্রাচীরের দৃশ্যমান অংশ  
চীনের মিং রাজ বংশীয় শাসন আমলের ছিল তৈরী।
আটহাজার আটশত একান্ন কিমি নির্মাণ
করতে হয়েছিল সক্ষম পরিবেশ ছিল বৈরী।

চীনের মহাপ্রাচীরটি তৈরী করতে  
চীনের বিশটি রাজ বংশ দিয়েছে অক্লান্ত শ্রম।
তারা বিভিন্ন ধাপে ধাপে সংস্কার
সম্প্রসারণ পরিবর্ধন করেছে পুড়োদম।

সামরিক কাঠামো মহাপ্রাচীর তৈরীতে
জোরপূর্বক দশলক্ষ শ্রমিক হয়ে ছিল খাটানো।
মহাপ্রাচীর নির্মাণে সৈনিক জনগণ
সাজাপ্রাপ্ত আসামী হতো কাজ করানো।

পাশবিক শ্রমের কষাঘাতে চার লক্ষ
শ্রমিকের হয়ে ছিল নিদারুণ-করুণ অপমৃত্যু।
মৃত্যু বরণকারী অনেক শ্রমিককে
মহাপ্রাচীরে করা হয়েছে সমাহিত।

প্রাচীরটির দৈর্ঘ্য ছিল একুশ হাজার
একশত ছিয়ানব্বই কিমি বিশ্বের দীর্ঘতম স্বীকৃত।  
পৃথিবীর দীর্ঘতম মানব সমাধিস্থান
হিসেবে যাহা এখনো পর্যন্ত বিশ্বখ্যাত।

চীনের প্রাচীর নির্মিত হয়েছিল মূলত
উত্তর চীনের যাযাবর ও মঙ্গলীয় দূস্য প্রতিরোধে।
বাস্তব উদ্দেশ্য হয়নি পুড়ো সফল চেঙ্গিস
বাহিনীর প্রবেশ বাঁধা টিকেনি গতিরোধে।

চীনের মহাপ্রাচীর শুধু প্রাচীরই নয়
ব্যবহৃত হয়েছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজে।
সামরিক স্থাপনা নিরাপত্তা চৌকি অফিস বহিঃশত্রু,
উপর নজরদারীত্ব চলত রব রব সাজে।

চীনের মহাপ্রাচীর তৈরী করা হয়েছিল  
বহিঃশত্রুর অনুপ্রবেশ রুদ্ধ করতে।
বর্তমান বহিঃবিশ্বের প্রায় পাঁচ কোটি জনগণ মহা প্রাচীর অবগাহন করে বৈধব্যব্রতে।

মহাপ্রাচীর নির্মিত হয়েছিল সাড়ে একুশ
ফুট প্রশস্ত, বিশ ফুট থেকে ছয়চল্লিশ ফুট উঁচু করে।
মহাপ্রাচীর নন্দিত বাডালিং দর্শনে তিন
শতাধিক রাষ্ট্র প্রধানসহ সবার মন কাঁড়ে।

মার্চ ২১, ২০২১