তামিমদারী লাকমা ও যোজন গোত্রের ত্রিশ
জন লোক লইয়া সমুদ্র পথে করিল যাত্রা।
দূর্যোগপূর্ণ সমুদ্রে টালমাটাল ঢেউয়ের কবলে
পড়িয়া জাহাজ ত্রিশদিন সমুদ্রে কাটায়।

বৈরী আবহাওয়ায় নিরুপায় হইয়া মধ্যসাগরে
কোন একটি অজানা দ্বীপে জাহাজ ভিড়ায়।
জাহাজ হইতে নামিয়া দ্বীপে উঠিলে অদ্ভুত
প্রকৃতির আজব রহস্যাবৃত জন্তু দেখিতে পায়।

অদ্ভুত জন্তুটির সমস্ত শরীর ঘন কালো
মোটা-লম্বা পশমে ছিল রহস্যজনক ঢাকা।
জন্তুটির অগ্রপশ্চাৎ চিনিবার ছিলনা কোন
উপায়, দেখিতে ভীতিপ্রদ প্রদর্শিত হওয়া।

তামীমদারী জন্তুটিকে বলিল, "অকল্যাণ
হউক তোমার, কে তুমি, কি তোমার পরিচয়”।
আমি তথ্য সংগ্রহকারী গোয়েন্দা, সম্মুখের ঘরে
যাও, লোকটি অপেক্ষায় তোমার দীর্ঘ সময়।

তামীমদারী ভয়েভয়ে অগ্রসর হইয়া ঘরের
ভিতর বৃহৎ আকৃতির লোকটি দেখিতে পায়।
এতো বড় বৃহৎ আকৃতির লোক, পূর্বে
কখনো দেখিতে পায় নাই এই দুনিয়ায়।

হাত দুইটি ঘাড়ের উপরে, হাটু ও গোড়ালির
মধ্যখানে শক্তভাবে বাঁধা শিকলে লোহার।
তামীমদারী বলিল,"মরণ হউক তোমার"
হইতে পার তুমি শয়তান, বল পরিচয় তোমার।

লোকটি বলিল, "আমার নিকট আসিয়াছ তুমি"
আগে পরিচয় হইবে তোমার।
তামীমদারীর মুখে দ্বীপের প্রবেশ কাহিনী শুনিয়া,
তাহার পরিচয় বলিল, "আমি খারে দাজ্জাল "।

আমি অচিরেই আটকাদেশ হইতে মুক্তি পাইব,
আর বেশীদিন বাকী নাই।
তোমাদের নিকট হইতে আমি যেন কিছু তথ্য
সংবাদ অধীর আগ্রহভরে সংগ্রহ করিতে চাই।

বাইছান সম্পর্কে বল, সেইখানকার খেজুরের
বাগানে গাছগুলি ফল দেয় কি এখনো?
তামীমদারীর নিকট ফল দেওয়ার খবর শুনিয়া
বলিল, অচিরেই ফল দেওয়া বন্ধ হইবে যেনো।

বুহাইরাতুল দাবারিয়া সম্পর্কে বল, সেইখানে
কি এখনো পানি আছে পূর্বের মতো?
তামীমদারীর নিকট পানির উপস্থিতি শুনিয়া
বলিল, অচিরেই হইবে সমস্ত নিঃশেষ বিন্দুবৃত্ত।

যুগার নামক ঝর্ণা সম্পর্কে বল, এখনো কি
পানি আছে, কৃষক পানিতে করিতেছে আবাদ?
তামীমদারীর নিকট পানির উপস্থিতি শুনিয়া
বলিল, অচিরেই বন্ধ হইয়া যাইবে জলপ্রপাত।

উর্মিদের নবী সম্পর্কে বল, নবীর আগমন,
আরব যুদ্ধের কি সংবাদ রহিয়াছে?
উর্মী নবীর আগমন, যুদ্ধে জয়লাভ, আরবদের
আনুগত্য শুনিয়া বলিল, "ভালো করিয়াছে"।

খারে দাজ্জাল মুক্তি পাইয়া চল্লিশ দিনের মধ্যে
সমগ্র দুনিয়া করিবে প্রদক্ষিণ।
খুবদ্রুত গতিসম্পন্ন হইবে সে, মুহূর্তের মধ্যেই
এক এলাকা হইতে অন্যত্র করিবে বিচরণ।

দাজ্জাল প্রভু বলিয়া দাবি করিবে এবং এমন
কিছু অলৌকিক ও অকাট্য দেখাইবে যুক্তি।
দুর্বল ঈমানের মানুষ, দেখিয়া হইবে দিশেহারা
সাথে হইবে বিভ্রান্তি, তাহাদের হইবে ভীষণ ক্ষতি।

ফেৎনা সৃষ্টিকারী ভীষণ ধূর্তবাজ সে, তাহার
সৃষ্ট ফেৎনা ভাসিবে বিশ্ব হইবে অন্ধকার।
ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের হইবেনা কোনরূপ ক্ষতি,
তাহারা ঈমানী শক্তিতে থাকিবে একাকার।

দামেস্ক শহরের পূর্বপ্রান্ত একটি মসজিদে সাদা
মিনারে, ঈশা ইবনে মারিয়াম করিবে আগমন।
ঈশা (আঃ) অল্প সংখ্যক মুমিন বান্দা লইয়া
বিশাল বাহিনীর দাজ্জালকে করিবে আক্রমণ।

দাজ্জাল অগ্রসর হইবে বাইতুল মোকাদ্দাসের
দিকে, পিছন হইতে ঈশা (আঃ) করিবে ধাওয়া।
ঈশা ( আঃ) কে দেখিয়া দাজ্জালের অবস্থা
হইবে এমন, যেন পানিতে লবণ গলিয়া যাওয়া।

ঈশা (আঃ) দাজ্জালকে লক্ষ্য করিয়া বলিবে,
একটি আঘাত করিব তোমায় হইবে ছিন্নভিন্ন।
ঈশা (আঃ) বর্শা বিদ্ধ করিয়া দাজ্জালকে
করিবে খতম, তান্ডব অহমিকা হইবে চূর্ণবিচূর্ণ।

ঈশা (আঃ) মুমিন বান্দা বাহিনী লইয়া ইহুদীদের
উপর করিবে চরমভাবে মুমূর্ষু আক্রমণ।
পাপিষ্ঠ ইহুদীদের হত্যা করিবে একের পর এক
যেন কঁচু কাঁটার মতন।

ইহুদী লুকাইবে গাছঝোপের ভিতর, গাছ বলিবে,
হে মুসলিম, ইহুদী লুকাইয়া আছে আমার পিছন।
শেষ পরিণতি হইবে না রক্ষা জীবন,
চরম শিক্ষা অপকর্মের, মৃত্যুর স্বাদ করিবে গ্রহণ।

ইহুদী লুকাইবে পাথরের আড়ালে, পাথর বলিবে,
হে মুসলিম, ইহুদী লুকাইয়া আছে আমার পিছন।
ইহুদীকে তখন করিবে হত্যা, অপকর্মের
হিসাব চরমভাবে কড়াগণ্ডা বুঝিয়া লইবে তখন।

ঘারকাত গাছের আঁড়ালে লুকাইবে ইহুদী, বৃক্ষটি
গোপন করিতে চেষ্টা করিবে তখন।
বৃক্ষটি ইহুদী গাছ হওয়ায়, বৃক্ষটি তখন চুপ থাকিয়া
ইহুদীদের বাঁচাইতে চেষ্টায় থাকিবে সর্বক্ষণ।

ফেৎনা সৃষ্টিকারী দাজ্জালের অবস্থান হইল, সাম্প্য
দেশীয়, ভূমধ্য, আরব্য সাগরে কিম্বা পূর্বদিক।
বন্দী অবস্থায় রহিয়াছে দাজ্জাল,পাইবে না কভূ ছাড়া,
যতক্ষণ পর্যন্ত হইবে না প্রভুর নির্দেশ নিয়মতান্ত্রিক।       (

সংকলিত ) জুন ১৭, ২০২১ খ্রিঃ