ছোট্ট বেলায় দেখিতাম অভাব অনটন আর
প্রাকৃতিক দূর্যোগে দুর্বিষহ জীবন যন্ত্রণা।
আজও অশ্রুজলে সিক্ত হয় দু'চোখ, কষ্ট
দুর্ভোগের না ছিলো কোন সীমানা।

বিনা টাকায় বছর খাঁটিত শুধু পেট ভরিয়া
খাইতে পারিত দু'মুঠো ভাত।
কার্যকর্মে ছিলো সচেতন, মনে ছিলো আনন্দ,
রক্ষা পাইত অপোষ্যতার অভিসম্পাত।

হতভাগ্যদের হাসি আনন্দের মধ্যেও দু'চোখের
কোনায় থাকিত অবধারিত অশ্রুধার।
ছোট্ট ছোট্ট কঁচিসোনা অপোষ্য করিতেছে,
কতো কষ্ট নাজানি হইতেছে সোনা আমার।

দু'চোখের এই অশ্রু কখনো দূরীভূত হইবার নয়,
অন্ধকারাচ্ছন্ন তাহাদেরে এই জীবনে।
জনম জনম চলিয়া যাইত কষ্ট যাতনায়, সুখের
মুখ দেখিতে পাইত না কভু এই ভুবনে।

জনম দুখিনী মা স্বচ্ছল পরিবারে কর্ম করিতে
আসিতেন সন্তানদের সাথে করিয়া লইয়া।
একটু ক্ষুতকুঁড়ো ভাতের ফ্যান খাইয়া মৃত্যুক্ষুধা
করিত নিবারণ তবুও তাহাদের দিন যাইত চলিয়া।

কঁচিসোনারা কেউবা কুঁড়াইত লাকড়ি কেউবা
আবার চুল্লীতে ধরাইত জ্বাল।
অতি ভয়েভয়ে থাকিত তাহারা কখন জানি
কেউবা আবার বসাইবে ধমক মুখে তুলিবে গাল।

সারাদিন ভিক্ষাবৃত্তি করিয়া পাইত ক্ষুতভাঙ্গা
সোঁয়া এক কেজি চাউল।
নুন আনিতে পান্তা ফোরাইত জীবন তাহাদের
ছিলো দুর্বিষহ অনেক কঠিন খুবই বেহাল।

বন জঙ্গল হইতে কাঁচা কাঠ কাঁটিয়া রৌদ্রে
শুকাইতে তাহাদের করিতে হইত অপেক্ষা।
শুকনো কাঠের আঁটি বাঁধিয়া বিক্রিত টাকায়
রসদের হইত তাহাদের ব্যবস্থা।

অভাব অনটনে নিষ্পেষিত হইয়া কাঁটিত
এই হতভাগ্য বঞ্চিতদের জীবন।
অনাহারে অর্ধাহারে দুর্বিষহ কষ্ট যন্ত্রণা সহ্য
করিয়া সর্বক্ষণ হইত অন্তদহন।

ক্ষুধার জ্বালা ও পুষ্টিহীনতা ভোগিয়া ভোগিয়া
শরীর হইত শূন্য-কঙ্কালসার।
ঔষধপত্রহীন অসুস্থতায় ধুঁকেধুঁকে ভোগিয়া
মৃত্যুদূত কে করিত তাহারা নমস্কার।

সূর্যগ্রহনে গ্রাসকৃত সূর্যের হইয়াছে উদয়ন,
অন্ধাকার হইল দূরীভূত।
দেখি না এখন আর অপোষ্যতা ও পুষ্টিহীনতা
ভোগিয়া কঙ্কালসার, চিকিৎসাহীন অপমৃত্যু।

ভাগ্যের হইয়াছে অভূতপূর্ব উন্নয়ন, ক্ষুধার
জ্বালা হইয়াছে নিবারণ।
দারিদ্রতার তীব্রাঘাত করিতে পারিতেছেনা এখন
আর কষাঘাত, দুশ্চিন্তার হইয়াছে অপসারণ।

২৮ শে নভেম্বর, ২০২০