একটা কথা উল্লেখ করতে চাই, বই বের হলে কবি হয়, না বের হলে কবি হয় না। এই কথাটা সত্য হতে পারে, কিন্তু আমি গ্রহণ করতে পারছি না। আমি মনে করি যে কবিতা লেখেন, সে নিশ্চয় কবি। Like who writes poem is a Poet. হুমায়ুন আজাদ তাঁর “নাইটিংগেলের প্রতি” তে উল্লেখ করেছেন যে “...বাজে দর্শন কোনো দর্শন নয়, যদিও বাজে দার্শনিকতার অভাব নেই; কিন্তু খারাপ কবিতাও কবিতা— খারাপ কবিতা। দর্শনের লক্ষ্য ব্যাখ্যা করা, নানা দুরূহ সমস্যা সমাধান করা; কবিতার লক্ষ্য তা নয়।”
তবে ‘কবি’ উপসর্গটি “ইঞ্জিনিয়ার” “ডাক্তার”-এর মত নয় যে কবি-অমুক কবি-তমুক বলে সম্বোধন করতে হবে। সেইটা শুনতেও যেমন অরুচিকর, তেমনই প্রয়োগেও ভুল আছে।
আবার ইতিহাসে অনেক কবি আছে যাদের মৃত্যুর পরই তাদের ৮০ ভাগ কবিতা প্রকাশ হয়েছে, এর আগে অপ্রকাশিতই ছিল। হয়তবা এমন ৮০ ভাগ কবিতা একই মানের কারো সামনেই আসেনি।
একটা স্পষ্ট উদাহরণ হতে পারে জীবনানন্দ দাশ, তার কবিতা আর উপমা যতগুলো আমাকে ভাবিয়ে তুলে একটাও তার জীবদ্দশায় প্রকাশিত না।
শুধু বাংলাতে না, অনেক কাব্যজগতেও এমনটা হয়েছে, যেমন ধরুন, উলিয়াম ব্লেইক, কাফকা(যদিও তিনি কবি নন), এমেলি ডিকিনসন, সিলভিয়া প্লাথ ইত্যাদি। কাফকাকে উল্লেখ করার কারণ হল, তিনি তাঁর নব্বই শতাংশ লেখা পুরিয়েই ফেলেছিলেন! কবি নজরুলেরও এইরকম অসংখ্য কবিতার কোন হদিসও নেই।
কবিতা বা কবি এইসব জনপ্রিয়তার মধ্যে পরে না, যারা জনপ্রিয়তা জন্য নিজেদের ফেসবুকে অজ্ঞ দের নিয়ে সংঘ গড়ে তুলছে তারা হয়ত কবিতার মৌলিক চাহিদা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে।