বাবা আমাদের আদর করতেন, গভীর করে চুমু খেতেন,
কাঁধে তুলতেন, শূন্যে ছুঁড়ে হাত বাড়িয়ে লুফে নিতেন,
বাবা আমাদের ঘোড়ায় চড়াতেন, নীল আকাশে রং চেনাতেন,
কাঠি লজেন্স কিনে দিতেন, মেলার সময় কাঠের গাড়ি,
গ্লাস টিউবে ম্যাজিক রকেট, পূজার সময় আতশবাজি।
বাবা আমাদের আদর করতেন, গাঢ় স্নেহে চুমু খেতেন,
সামর্থের মধ্যে বাবা ঠিকই মন ভরাতেন, শখ ফুরাতেন।
মা আমাদের আদর করতেন, তারও বেশি শাসন করতেন।
মা শাসন করতেন ধমক দিয়ে, জোর করে খাইয়েদাইয়ে,
প্রতিদিনের গোসল দিয়ে, সন্ধ্যা হলে হাতপা ধুয়ে,
মা শাসন করতেন শ্রান্ত দেহে ঘুমের ঘোরে ঢুলতে ঢুলতে
মেঝের উপর পড়ার বইয়ে, না-খাওয়ার খুব বদভ্যাসে
শীর্ণকায় শরীর দেখে প্রহার করে, ভেজা চোখে ছড়ার সুরে।
মা আমাদের আদর করতেন চোখে রেখে,
মা আমাদের শাসন করতেন দেখে রেখে।
বাবা আমাদের আগলে রাখতেন নিরাপদে,
ডুবিয়ে রাখতেন ভালোবাসায়;
মা আমাদের ভালোবাসতেন বাস্তবতায়
শাসনমোড়া আদর-সোহাগ আর মমতায়।
বাবা আমাদের নির্ভরতা, শক্ত খুঁটির চৌচালা ঘর;
মা আমাদের গেরস্থালি, পূর্ণতা আর পাখির পাঁজর।