|| হেমাঙ্গিনী ||

বড় ভয়ে জাগি, হেমাঙ্গিনী, নিথর আঁখি পল্লব তুলে ধরে
তুমি যাবে যাও, টুক করে তলিয়ে, অবাধ্য ঘুমের ঘোরে
আমারও যে চোখে লাগে ঘুম ঘোর, দৃষ্টি চকিতে হারায়
মাথা ঢলে পড়ে তোমারই পাশে ওই ফেননিভ শয্যায়

বুঝি বিদায়ের ভারে ভারী আজ, তোমার চোখের পলক
হৈম সাজে সেজে বিছিয়েছ যে আঁখিতে ঘুমের অলক
তাই, নিশ্চিন্তে ঘুমাও হেমাঙ্গিনী, রাত তো অনেক হল
আমি জেগে দিই পাহারা, কখনও যদি তুমি চোখ খোল

যারা চিন্তিত, কেন তোমার হেমাঙ্গ জেগে দিই পাহারা
তারা জানে না, সম্পর্কের অন্তে একজন হয় নিদ হারা
বোঝে না, কখনও পারে না দুজনে সাথে আঁখি বুজতে
কে আগে ঘুমবে, কে বা পরে, কেন যায় মিছে খুঁজতে

আমি ঘুমব, তুমি জাগবে, এমন তো কথা কিছু ছিল না
এবে কেন তুমি জাগবে, যখনও ঈষদুষ্ণ বিন্যস্ত বিছানা
বলি, এই বেলা যাও হেমাঙ্গিনী, নিবিয়ে দিয়েছি আলো
যাও চুপিসারে পারাপারের নাওয়ের নোঙ্গরখানি তোল

যৌবনের ভাঁটার সাথে সাথে সময়ের জোয়ার জোরদার
বয়ে যাও ওই জোয়ারে ; মিলব ঠিকই মোহনায় পুনর্বার
ততদিন হেমাঙ্গ নিয়ে আমি বসে রইব সাজিয়ে শূন্য অঙ্ক
না চেয়ে ছোঁয়াতে হেমেতে হোম অনলের কলুষ কলঙ্ক

তুমি নিশ্চিন্তে ঘুমাও, হেমাঙ্গিনী, ফুটছে ভোরের আলো
তুমি যাবে আগে, আমি কিছু পরে, সেই মন্দের ভালো ||
----------------------------
© ইন্দ্রনীর / ২৯ অগাস্ট ২০১৪