যখনই দেখি – তুমি বদলেছ ছবি – রোজই এক নতুনত্ব
কোনটা যে তোমার আসল রূপ, কোন রূপে আছে সত্য ?
কখন বাগানে ঝারি হাতে নিয়ে জল দিচ্ছ গাছে, ফুলে
কখন গাড়ি থেকে হাত নাড়ছ, কাউকে নামিয়ে স্কুলে
কখন দাঁড়িয়ে মাথা নীচু করে ছাড়াচ্ছ গোটানো শাড়ি
কখন আয়নায় খুঁটিয়ে দেখছ শুভ্র দাঁত, গোলাপি মাড়ি
কখন ড্রেসিং টেবিলে বসে বিলি কাটছ জটিল রুখু চুলে
কখন বাথটাবে গোড়ালি ঘষছ, গান গেয়ে, দুলে দুলে
কখন রূপচর্চায়, সিঁদুরের সাথে রঙে মানাও দুই ঠোঁট
কখন চিঠি লিখতে আনমনা, খেয়ে যাও চিন্তার হোঁচট
কখন গোছাও ওই মণিবন্ধ, যা বাঁধা শাঁখা, পলা, নোয়ায়
কখন হাতে নিয়ে কবিতার বই, ধ্যান নেই যেটা পড়ায়
কখন জানালায় উদাসী মুখ, চোখে মেলে আদিগন্ত দৃষ্টি
গহীন আঁধারে নির্বাসিতা ইভ তুমি, আদিম আদমের সৃষ্টি
ঝারি, জল, ফুল, গাড়ি, হাত, স্কুল, চুল, বাথটাব, শাড়ি,
সিন্দূর, আয়না, দাঁত, মাড়ি, চিঠি, কবিতায় চিন্তার পাড়ি,
মণিবন্ধ, পলা, শাঁখা, নোয়া ... এক এক তোমার কোয়া
অন্তরঙ্গতার শখ মেটায় না তাদের সহস্র টুকরো ছোঁয়া
ক্যামেরা কিনব, তুলব ছবি সব, এ কথা ভাবতে ভাবতে
ডুবে গেল চিরতরের মুহূর্ত, অচির সময়ের ঘূর্ণি-আবর্তে
জানা ছিল না তো মন-নয়নের আদি পিন-হোল ক্যামেরা
তুলেছে ছবি, স্বপ্নিল একই, নিয়ে তার বিবর্তমান চেহারা
তাতে তোলা ছবি একটাই, কিন্তু যখনই সেটাকে দেখি
মনের মধ্যে পাতা খোলে আমার কল্পনাকারী দুই আঁখি
সে কল্পনায় পুনর্বাসিত ইভ তুমি, খসিয়ে লজ্জার নির্মোক
খুলেছ জানালা, মেলেছ দিক্বিদিক-জ্ঞান শূন্য, মুগ্ধ চোখ
দেখতে, দেখতে দেখি বদলায়, সেই ছবিটি নিতি-নিত্য
সে সবেতে আছে নানান রূপ, সব রূপই লাগে চিরসত্য ||
------------------------------------------------------
© ইন্দ্রনীর / ২৮ অক্টোবর ২০১৩