সকালঃ
একটি অপরিচিত গাণিতিক সংখ্যা ভেসে
উঠলো দুরাভাসযন্ত্রে, হ্যালো -হ্যালো
আমি অধরা , কেমন আছো
চিনতে অসুবিধা হচ্ছে না'তো?
নাহঃ
বলো অধরা ,তোমার কন্ঠ...
সে-কি ভোলা যায় ? বীণার ঝংকারের
আওয়াজ অনুরূপ । মৃত্যুক্ষণ পর্যন্ত
অদ্যাবধি কানে বেজেই চলবে
শুনছোঃ
আমি ঢাকায় আসব আত্মীয় হাসপাতালে
আসাটা খুব জরুরি নয়
তোমায় খুব দেখতে ইচ্ছে,
করছে। তুমি আসবে তো !
আমার জন্য অপেক্ষা দীর্ঘক্ষণ পথিমধ্যে
নিঃশব্দ নিদারুণ আকুল অনুভূতি
হরিণীচোখ দূর থেকেই অবলোকন,
করছিলো _আমার আসার পথ।
তোমার ওষ্ঠ গ্রীবা আর চিবুক
সেই আগের মতোই আছে।
এতটুকুও বদলায়নি গত একদশকে
দিনাদিন জীর্ণশীর্ণ কলেবর তোমার
গায়ের রঙ উজ্জ্বলতা হারিয়েছে
মুখটাও ফ্যাকাশে বিবর্ণ একপ্রকার ।
যুগল ঠোঁট ভালোবাসা বিহীন শুষ্কতায়
ভুগছে ,অনেক বছর স্পষ্টতই।
যেন ভিটামিন বিহীন কোন
শিশুদের লিউকোপ্লাকিয়া রোগের মতো।
কিশোরী মনোভাব একচিলতেও কমেনি
ভীষণ জেদী পূর্বের ন্যায়।
তবে প্রশ্নবাণ ছুঁড়েছো, এত দেরী
কেন ? আর বদলাবে না।
এজন্যই হারিয়েছো তোমার অধরাকে
যাকে প্রচন্ড ভালবাসতে ।
কাছে যেতেই , হাত বাড়ালে ফিরিয়ে
দাওনি। যেমনটি আগে দিতে।
এখন বুঝি আর দ্বিধান্বিত নও
সময়ের নির্মম প্রয়োজনে।
এখন তুমি অন্য ফুলদানীতে সাজাও
নানা রঙের স্বপ্ন
এই ফুলদানী কিংবা টব তাই
শূন্য বরাবরের মতো।
চলে যাবার মুহূর্তে পিচঢালা
রাস্তার বুকচিরে চলছে রিক্সাযান
একদিন এভাবেই হৃদপি বিদীর্ণ
করে চলে গিয়েছিলে।
যাত্রা নদী বন্দরের দিকে ক্রমশঃ
দুজনে চলছি গায়ে গায়ে লেপ্টে,
সুখানুভূতি চরম পর্যায়ে পৌঁছে
যাচ্ছিল, ইহা বর্ণনাতীত।
অতঃপর
চলে যাওয়া দাঁড়িয়ে শুধু দেখলাম
দু 'ফোঁটা নোনাজলে বিদায় দিয়ে
আবার ফেরা একাকীত্বের অতীত ...
বর্তমান-ভবিষ্যতের নষ্টনীড়ে।