দমকা হাওয়ারা ইমনের সুর তুলতে পারবে না,
সেদিন কেবল দ্বৈতনামে অগোচরে হয়ে যাবে বিলাহরি।
ধরা দেয় শশাঙ্ক মেঘপুঞ্জের লুকোচুরি রংবাহারি খেলা।
এখন তোমাতে জড়িয়ে আছে খান্ডবদাহের বারোয়ারী মেলা।
দু'টি মুনিয়া পাখির ছিলো একটি অশ্চর্য আয়না
আরো ছিল সাতরঙা ভালোবাসার কবিতা লেখার বায়না,
দ্বিধা নেই, যদিও অন্তরমহল অবিশ্বাসের ছাঁচে গড়া,
থাকুক না অন্যজনে, বহুজনে তোমার মন হরা।
তবুও বলি না বলা কথা; আমার কাছে
নিরবতা শক্তির চূড়ান্ত অস্ত্র পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ কবিতা!
অথচ একদিন এখানেই ছিলো এমন কুহক দিন
পাতাবাহার রাত ছিলো, ঝিঁঝিঁ পোকা সুখ ছিলো,
এক-পা ভাঙা টেবিলের এক কর্নারে পড়ে থাকা
তানপুরাটায় জগতের সব সুরেলা পাখির সুর ছিলো।
এখন যখন তখন সমস্ত আকাশ দেখো দোকলা
লাল, নীল, হলুদ, সাদা, তামাটে রঙের আকাশ
এখানে ঈশান কোণে সদ্য পোয়াতি মেঘের মেলা,
আর তাদেরও বেলা নেই অপ্রকাশিত সব কবিতার।
বইয়ের পাণ্ডুলিপি, আমার মতো তারাও করে দিদৃক্ষা
দীর্ঘশ্বাসের নৈবেদ্য হাতে দাঁড়িয়ে থাকে ক্ষমাহীন দৃষ্টিতে;
এসবই হলো আমার সদ্য ডিভোর্সি করুণ রোজনামচা;
জল ভাঙতে ভাঙতে এখন ভালোবাসার জলকাটা শেকড়।
যদি ইচ্ছেরাও একসময় পোয়াতি হতো, দিতো ভবিষ্যৎ
আনমনে ছুঁয়ে দিতে পারতাম আজন্মকাল উষর মাটি
কিছুতেই কিছু করতে পারিনি শেষ অব্দি, "অনুলতা"
সংশয়ের পদচ্ছাপে মৌনতাই হল পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ কবিতা!
এই যে চকচকে অবতল- এখানে মানায় না
নিস্প্রভ সন্ধ্যায় ছাতিমের ঘ্রাণ- তবু অশরীরী ঘ্রাণ
সদ্য জোড়ভাঙা একটা রাজহাঁস একা একা সাঁতরায়-
তার কোনো ডাক নাম নেই- তবু সে;
ডানায় মেখে নেয় আদরে খাল-পুকুরের জল–
আর ভাবে ঘুমভাঙা নীরবতাই পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ কবিতা!
স্মৃতি মুছে গেলে তার মনে পড়ে যায়
আর কোনো প্রিয়মুখ বাকী নেই, নেই আপনজন
অধিকার করে এতদিন যারা ছিল এই মনে!
সমস্ত পৃথিবীর সব একান্ত নীরবতাই সর্বশ্রেষ্ঠ কবিতা!
— ইমরান শাহ্