প্রথম প্রথম তোমায়
অন্য কারো সঙ্গে দেখলে
হৃদয় জুড়ে কম্পন হত, ধুকধুক করতো বুক
এই বুঝি তোমায় হারাচ্ছি
তিলেতিলে অন্য কোথাও বসতি গড়ছো তুমি
অথচ এখন তেমন হয় না।
এখন মনে হয়, তুমি বুঝি কোনোকালেই আমার ছিলে না
তুমি ছিলে অন্যকারো
আমারই ভুল ছিলো
তুমি কত্তবড় আর আমি সে তুলনায় তো নেহাৎ
টাকাপয়সা আভিজাত্য
কিংবা তোমার চলাফেরা
সবই তো আমার বিপরীত!
তবে ভালো আমি তোমাকে বাসতাম
আমাকে ভালোবাসার চেয়েও বেশি।
ভালোবাসার ব্যাপারে কোনো কমতি ছিলো না,
ছিলো না কার্পণ্য,
অবহেলা, অবজ্ঞা কিংবা
আমাকে দেয়া তোমার উপেক্ষা।
বরং ভালোবাসার ব্যাপারে
তোমাকে একটা দুপুর না দেখলে
শ্বাসকষ্ট হতো, ফুসফুস যেনো বন্ধ হয়ে যেত
যতই দূরে থাকতাম, দিনশেষে হোক কিংবা রাত্রিতে
শুধু তোমাকে দেখতে
দৌড়াতাম তোমারই আঙিনায়।
এখন নিজেকে বুদ্ধু লাগে
মনে হয়, পৃথিবীর সবচেয়ে বড়
বুদ্ধু বুঝি আমিই ছিলাম
নিজেকে কস্মিনকালেও কঠিন করতে পারিনি
আর তাই এখনো,
অদেখার ভেতর দেখি
অজানার ভেতর খুঁজি
গানে কিংবা কবিতায়
ভাবতে চাই, তোমায়।
তুমিও কি ভাব?
কখনো মনে হয় আমার অস্তিত্ব
যা একদিন তোমার সাথে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ছিলো
তুমি এখন বড্ড সুখে আছো
এখানে-ওখানে কত্ত ঘুরে বেড়াচ্ছো
কখনো শালিকের মত উড়ে উড়ে হাওর দেখছো
কখনো বা গাছের ডালে বসে দেখছো সবুজ
কখনো গভীর বন্ধনে
হাতে হাত রেখে হাঁটছো দীর্ঘপথ
বাসের সিটে বসে আছো
মাথা রাখছো অন্যকারো কাঁধে।
দেখো দেখি কি কাণ্ড,
এত সতর্কতার ভেতরেও
চোখ দেখে নেয় তোমার চোখ
আর তোমার সমস্ত কর্মকাণ্ড!
আচ্ছা, বিয়ে করছো কবে?
এখনো কি ছ’মাস হয়নি?
অথচ আমার কাছ থেকে যাবার
তোমার কি তাড়া
তুমি বারবার বলতে বিয়ে, বিয়ে, বিয়ে!
তাও আর ছ’মাস পরে।
এখন বছরের পর বছর চলে যায়
তবুও ছ’মাস হয় না বুঝি?
তুমি কখনোই আমাদের পরিণতি চাওনি
না চাওয়ারই কথা, কিন্তু
তাই বলে নাটকীয়তা কেনো?
বলতে পারতে তুমি,
নতুন কাউকে পেয়েছো
উড়াল দিতে চাচ্ছো পাখির মত
তা বললে না,
এর কাছে ওর কাছে শুনলাম কতকি
রেস্তোরাঁ, পার্ক, ক্যাম্পাস, থিয়েটার কিংবা সিনেমা হল
কখনোই কানে নিইনি
শেষ পর্যন্ত আমার কি সৌভাগ্য দেখো
আমার চোখেই পড়লে
এখন তো চোখেও নিতে চাইনি
কিন্তু মন তো মানেনি!
আমার তো কিছু নেই
অন্ততপক্ষে তোমার শূন্যতাটুকু
বুকের ভেতর বাসা বেঁধে থাকুক জীবনভর।
তুমি বরং সুখী হও
এক পৃথিবীর সবসুখ তোমার হোক
এটা আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ
আমার জানা নেই, পদ্ম।