ফোন কলে জানতে পারলাম
সে আর বেঁচে নেই।
আমি বিশ্বাস করি না,
তবুও সত্য টা মানতে বাধ্য হলাম।
তার মৃত্যুর খবর শুনে
একটুও আঁতকে উঠেনি,
চোখের কোণে এক ফোঁটা জলও গড়ায়নি।
কি করে গড়াবে!
যাকে সর্বস্ব উজাড় করে ভালবাসা
এমকি এখনও সে ভালবাসার রেশ
রয়েছে হৃদয় কার্নিশে,
সে মানুষটাই তার ছলনার ছোবলে
এতোটাই বিষাক্ত করে তুলেছিল যে
কাঁদতে কাঁদতে
কয়েক বছর পার করে দিয়েছিলাম,
এখন চোখে জল নেই
যে তার মৃত্যুর খবরে
এক ফোঁটা অশ্রুজল গড়িয়ে পড়বে।
যে মানুষটা নিঃস্ব করে গিয়েছিল
সে মানুষটার মৃত্যু কামনা
প্রতিনিয়ত পুষতাম
শ্যাওলা পড়া অন্তর উঠোনে,
আজ মৃত্যুর খবর শুনে
কেমন জানি নিজেকে খুব অচেনা লাগছে।
মস্তিষ্কে, বিবেকে, চোখের মনিতে
তার সাথে কাটানো সময়গুলো
নদীর স্রোতের মত বয়ে যাচ্ছে,
তবুও আমি কাঁদতে পারছি না
কিভাবে কাঁদবো!
বেদনার সাহারা ভূমিতে রেখে
পালিয়ে অন্য সুখ সন্ধানে যার বসবাস
তার জন্য একটু জল নেই চোখে।
কাঁদার চেষ্টা করছি
তবুও কাঁদতে পারছি না,
দশ দশমিক নয় মাত্রার ভূমিকম্প
বুকের ভিতর বারবার কম্পিত হচ্ছে,
লন্ডভন্ড করে যাচ্ছে সকল অভিযোগ,
তবুও আমি কাঁদতে পারছি না,
আমি নিশ্চুপ
কয়েক মিনিটের ব্যবধানে বড় বড় দীর্ঘশ্বাস।
কেন কষ্ট পাচ্ছি!
যা কষ্ট পাওয়ার তা তো
তার জীবদ্দশায় পেয়েছি,
তবে এখন কেন?
নাকি তার ফেরার অপেক্ষার সমাপ্তিতে
এই বিরহ!
নিথর এ চোখ জুড়ে কান্না আর আসে না।
তার মৃত্যুর একমাস আজ পেরিয়ে,
জানতে খুব ইচ্ছে করছে
আচ্ছ! তার দেহ কি পঁচে গলে গিয়েছে!
যে দেহ শত শত বার হামাগুড়ি দিয়েছি
যে দেহে অজানা কত শত মানুষের হামাগুড়ি
যে দেহের এতো এতো অহমিকার অন্তরালে
নিঃস্ব জীবন নিয়ে ছুটেছি পথে প্রান্তরে,
সত্যিই কি সে দেহ পঁচে গিয়েছে?
নাকি পোকারা কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে?
এ ভাবতে না ভাবতে
টলমল জল চোখে
তবুও বের হচ্ছে না।
আমি কাঁদতে চাই
যে মানুষটা বছরের পর বছর কাঁদিয়েছে
সে মানুষটার মহাপ্রস্থানে একটু কাঁদতে চাই।
২০ঃ০৫
০৩/০৫/২০২১ইং