নিয়ন আলো জ্বেলে প্রতীক্ষায় আছে রাজপথ;
চারদেয়ালের মাঝে ধোঁয়ার আলপনা এঁকে কেটে যাচ্ছে প্রহরের পর প্রহর-
অপেক্ষা তবুও ফুরায় না।
সন্ধ্যা নামে খুব আয়োজনে, রঙিন বাতির পসরা সাজে প্রয়োজনে।
এই বাতির ঝলকানি, কথার পিঠে কথা, তর্ক কিংবা প্রেমিকার ঠোঁটের দিকে অপলক দৃষ্টিপাত অথবা
তার চোখের আদিম ইশারা- সবই যেনো অসহ্যকর, অমূলক।
ঘরের বাতি নিভে যায় সহসা, এলোমেলো একজোড়া পা ব্যস্ত কদম ফেলে হেঁটে যায়;
যেনো স্টেশনের শেষ ট্রেনটা প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে যাচ্ছে।
পরিচিত কিছু মুখ ফেলে এসে নিয়ন লাইটের আলোয় দিয়াশলাই জ্বলে ওঠে,
ধোঁয়ার মিছিলে ব্যস্ত আগুনের ফুল ছিটকে পড়ে ফুটপাতে।
লম্বা টানে নিকোটিনে পুরু মস্তিষ্ক অবক্ষয়ের গল্প আঁটে;
এ গলি ছেড়ে ও গলি-
আলো পৌঁছায় না, পৌঁছায় আধপোড়া চাঁদ।
গোপন পশুর আনাগোনা বাড়ে রাজপথে, শিরা উপশিরা কামড়ে ছড়িয়ে যায় রন্ধ্রে রন্ধ্রে- রক্তের প্রতিটা সেলে।
পলিফোনিক রিঙটোনে পরিচিত নাম্বার, চোখ জুড়ে ছড়িয়ে যায় লোলুপ হাসি- ঠোঁটে ফোটে কামনাপরাগ।
দৃশ্যপটে ভাসে চুল বেয়ে নেমে আসা ঝর্ণাধারা, দেরাজে সলাজ হাসি। কিছু ভাজ কুয়াশা ঢাকা, কিছু ছড়িয়েছে দাম্ভিকতা।
পিশাচ হাসে মানুষের মুখোশে, মানুষ নামে রাত্রিপশু পা বাড়ায় পুষ্প হননে।
ভালবাসা ভেবে ভুল ভাবে প্রতিবার, শুধরায় না তবু। টান পড়ে আঁচলে, বাড়ে হৃদস্পন্দন।
কম্পিত গলা ঢোক গেলে সাবধানে, দাম্ভিকতা ভেঙে যায় কিছু সময়ের পরিসরে। কুয়াশার বদলে জমে নোনাজল- ঘাম, হিমালয়ে বাড়ে সুর্যের তাপ। পর্দার আড়ালে থেকে মুচকি হাসে কে?
তাকে কি দেখেছো সখি কভু? রেখেছো কি চোখ তার চোখে? ব্যস্ত ছিলে ভুলে ভরা বাস্তবে! কতো বাড়িয়েছো নোনাজল- ঘাম, কিছু আবেগ, অনুনয় পায়নি কখনোই দাম।

এক জোড়া পা নিয়নের নিচে দাঁড়িয়ে ছিলো ঠিকই; কিছু ভোর বেপরোয়া ধোঁয়ার মিছিল।
শালে তবু জড়িয়ে আছে তোমার শরীরের গত শীতের ঘ্রাণ, এমনি কতো বিকেল কেটেছে এ বুকে মাথা পেতে- অট্টহাসি, গল্প-আড্ডা-গান।