আমি এসে দাঁড়িয়েছি খুব সাধারণের লাইনে-
রোজ ভোরে গোসল করছি, চুল আঁচড়িয়ে বাস ধরে পৌঁছে যাচ্ছি অফিসে।
একঘেয়ে ক্লান্ত বিছানায় ফিরছি, রোজ ছয়টা বিশে এলার্ম দিচ্ছি
অগ্রজদের দেখলেই হাত উচিয়ে সালাম দিচ্ছি, দোকানিকে সমিহ করে সিগারেট চাচ্ছি -
অনুজদের স্নেহ ভরে গদগদ করে গাল টিপে দিচ্ছি।
বাজারের সস্তা রসিকতা ভর্তি ব্যাগ চুলায় চড়াচ্ছি, রোজ জীবনকে খিস্তি করে বমি করছি মোড়ের নিয়ন লাইট নিভে যাওয়ার আগ অব্দি;
বাড়ি ফিরছি না কতোদিন হলো আজ? আজ ভাড়া শোধ না করলে লাইন কেটে যাবে?
সবকিছু চুকিয়ে দিলে কি থাকবে আর? থাকবে না বলা কথা লুকিয়ে ফেলার দীর্ঘশ্বাস?
বেতনটা পেয়ে গেলেই সব শোধ করে দিচ্ছি তবু,
যেনো গত কয়েক শতাব্দি ধরে এসব নিয়মতান্ত্রিক ঘড়ির মতো করে যাচ্ছি রোজ!
অথচ তুমি,
সকালের স্নিগ্ধ গন্ধরাজ চাইতে পারতে -
একটা গোটা পাহাড় কিংবা নদী গড়িয়ে সমুদ্র চাইতে পারতে নিজের জন্যে?
কিংবা লাল নইলে নীল পাড়ের শাড়িই? শাদা জমিনে কারচুপি করা শাল? নাকি ওসব বড় বৈষয়িক?
একটু দার্শনিক হওয়া হতো না ওসব চাইলে, না? তাহলে কেনো চাইলে না, চাঁদ? নাকি আদিখ্যেতা বলে লোক হাসতো বলে চাইলে না?
লোকে শখ করে কতো কিছু চায়!
একটু লোভী হয়ে তো ব্যাংক ভর্তি টাকাও চাইতে পারতে? সেই টাকা দিয়ে কিনে নিতে পারতে হাজার মানুষ।
বাঘের দুধ, কিংবা দুষ্প্রাপ্য কোনো পাথর অথবা ভাগ্য বলে দেয়া আয়না। নতুবা, চাইতে পারতে-
একটা খোলা আকাশ, বিরাণ মাঠভর্তি কাশফুল- শঙখচিল - নক্ষত্রভরা রাত- জোছনার আলো - বৃষ্টি ভেজা ফুল- মেঘাচ্ছন্ন বিকেল, কতো কিছু ছিলো চাওয়ার!
জারজ অন্ধকারকে স্বাগত জানাতে পারতে অন্তপুরে,
বিষাদের মরমে এঁকে দিতে পারতে শাশ্বত ফুল
দূরত্বকে প্রতিমা করে বাড়াতে পারতে সাম্রাজ্য-
এতো কিছু ফেলে, তোমার কেনো আমাকে চাইতে হলো?

৪মে, ২০২১