আলোক ঝলমল তিলোত্তমার রাজপথ দিয়ে চলেছি একাকী।
উৎসবমুখর শহর, জমজমে আলো, নতুনত্বের মনোহরা প্রদর্শনী চতুর্দিকে।
আনাচেকানাচে নবযৌবনা, সুসজ্জিতা বঙ্গ-ললনাদের ঝাঁক।
উন্মুক্ত বেণী, ললাটে লাল টিপ, পরনের ঝাঁ চকচকে লালপেড়ে শাড়ি, মুখময় সিঁদুরের হোলি খেলা - বাঙালিয়ানার মিলনমেলা।
আলগা কাজলের ঘেরাটোপে বলগাহীন প্রেমের ছলকানি চোখে-মুখে।
নয়ন ধাঁধিয়ে যায়,
নয়ন থমকে দাঁড়ায়।
এখানেই বুঝি আছে সে? না! এখানে কোথাও নেই....
একবুক দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে নয়ন আবারো মিশে যায় সোনালী শহরের জনসমুদ্রে;
ভেসে যায় নয়ন লাবণ্যের জোয়ারে;
হাবুডুবু খায় রূপসীদের অতলান্তিক রূপসাগরে। একটার পর একটা মণ্ডপ...এ নয় ও, ও নয় সে... কোথাও তাকে খুঁজে পায় না নয়ন;
দেখা কি হবে না আর তার সঙ্গে?
"ফিরিয়া যদি সে আসে আমার খোঁজে ঝরা গোলাবে..."
আজ বিজয়া-দশমী;
উমার কৈলাসে ফেরার পালা।
ফেরা কি হবে না আর তার?
সে কি কোনদিন এসে বলবে না, "কাকে খুঁজে বেড়াও এই রূপ-সমুদ্রে?
এই তো আমি; ভালোবাসার মরীচিকার পিছনে ছুটে, ঘর বেঁধেছিলাম ভিন মনের চোরা-বালুচরে তোমাকে ভুলে;
ঠাঁই পেলেও শান্তি পাইনি মনের কোন-নগরে; ঘুরতে ঘুরতে নিয়তির লীলাখেলায় ফিরে এসেছি তোমারই টানে;
ভুল করেছি ভুলে যেতে চেয়ে;
ফিরিয়ে দেবে আমাকে?
এতো রাগ, এতো অভিমান!
আমাকে একটু সাজিয়ে দেবে তোমার মনের মতন করে?
....রাঙিয়ে দেবে আমার সিঁথি, ভালোবাসার সিঁদুরে?
শুভ বিজয়ার এই শুভলগ্নে, জয় হোক তোমার অপেক্ষার, তোমার বিশ্বাসের; পূর্ণ হোক তোমার পুণ্য ভালোবাসা এই পুণ্যলগ্নেই;
আমাকে আপন করে নাও লক্ষ্মীটি! নেবে না?"
শূন্য হৃদয়ের দেউলে ১০৮টা আশার প্রদীপ জ্বেলে স্বপ্নটা অন্তরে জিইয়ে রাখি নিরন্তর।
ওইতো, ওইতো....ওই বুঝি সে আসছে! ফিরে পাওয়ার কি অনির্বচনীয় মিলনসুখে প্রণয়ী মন গেয়ে ওঠে-
"মোর প্রিয়া হবে এসো রানী দেব খোঁপায় তারার ফুল.."