তখন আমার ছাত্রজীবন, সিক্স সেভেনে পড়ি,
হাওয়া খেয়ে বাড়ি ফিরি, স্কুল বাস ধরি।
বাড়িতে নেই বাবা মা, যে যার ব্যস্ত কাজে,
হাত-মুখ ধুয়ে দেখি, ঘড়িতে সাতটা বাজে।
কি করি কি করি, পেয়েছে বেজায় খিদে,
উদরবাবুর গুঁতো খেয়ে, হেঁশেলে ঢুকি সিধে।
দেখাবো এবার হাতের জাদু, ভানুমতির খেল,
কানা নিচু থালা নিয়েই, ঢালি সর্ষের তেল।
ওভেন জ্বালতে পারি নাকো, মোমবাতিই জ্বালি,
তেল না গরম করেই, ফেটানো ডিম ঢালি।
সাঁড়াশি ধরে ধরি থালা, খাচ্ছে এদিকে টাল,
ডিগবাজি খাবে বুঝি, আক্কেল গুড়ুম হাল!
ডিম এদিকে ভাজে নাকো, খাই ভ্যাবাচ্যাকা,
তাতা তেল দোল খায়, খাবো বুঝি ছ্যাঁকা।
বলতে বলতে ফোঁটা ফোঁটা, মাটিতে খায় গড়াগড়ি,
থতমত খেয়ে ছুটি, ন্যাতা আনতে তড়িঘড়ি।
ডিম ভাজতে গিয়ে হায়, খাচ্ছি যেন খাবি,
কেনরে মন তুললি এমন, আজব খাওয়ার দাবি!
নির্ঘাত ধমক বকুনি খাবো, খাবো মায়ের তাড়া,
কানমলা খেতে হবে, ভেবেই আমি সারা।
বুকটা করে দুরুদুরু, ভয়ে গুটিসুটি,
বাবা শুনেই খান দেখি, হাসিতে লুটোপুটি।
মা শুনে বিষম খান, জুটবে বুঝি সাজা!
হেসে বলেন চুমু খেয়ে, 'আজব ডিম ভাজা'।
ডিম ভাজা জুটলো কই, খেলাম ভালোই ঘোল,
পাড়াপড়শি জানতে পেরে, তুললো হাসির রোল।
পৈতেধারী বামুন হলেও, রসুইয়ের নই বামুন,
ভজহরি (মান্না) হতে গিয়ে, কেলেঙ্কারিটা ভাবুন!
ভাবছি রান্না শিখব এবার, আদা জল খেয়ে,
মজার কাণ্ড মনে পড়ে, স্মৃতির সরণী বেয়ে।
চলি বন্ধু পেটুক রাজা, পড়েছে মায়ের ডাক,
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসে, সবাই সুস্থ থাক।