তানিয়া তাহসিন;
আমাদের সহপাঠী,
শ্যামল বর্ণের মেয়েটার চোখ দুটো ছিলো বাদামী,
লম্বা নাকের ছায়ায় দেখা মিলতো মায়ার পাহাড়,
হাসির চেহারায় মন খারাপ ছিলো একটি মৃত যুক্তি,
কন্ঠের উচ্চারণে লুকিয়ে যেতো তাবৎ দুশ্চিন্তা!
একবার মেয়েটি কাজল বর্ণে তার চোখ এঁকেছিলো,
প্রিয় রঙে আমি লিখে দিলাম কাজল;
মেয়েটির প্রিয় শখ ছিলো আকাশ দেখা,
প্রিয় শখে আমি লিখে দিলাম তার কপাল!
তখন কদমের ঋতু;
এই শহরে বৃষ্টির তখন খুব ভীড়,
বৃষ্টিকে গায়ে মেখে মেয়েটা সাতাশি মিনিট ভিজেছিলো;
সেদিন ছিলো মেয়েটার একুশতম জন্মদিন,
একুশটা কদম এনে আমি গুঁজে দিয়েছিলাম তার চুলে,
মেয়েটা-
বেগুনি রঙের শাড়ির আঁচল দিয়ে মুছে দিয়েছিলো আমার কপালের ভয়,
তারপর আমাদের দশ আঙুলের আলাপনে আমরা উচ্চারণহীন হেঁটেছিলাম আরও একুশ মিনিট!
তানিয়া তাহসিন;
আমার সহধর্মিণী,
যার চোখে আমাকে তুলে রাখে প্রিয় আকারে,
সন্ধ্যার ঘরে যে আমার অপেক্ষায় থাকে সারাদিনের ক্লান্তি মুছে দিতে;
কপালে ঠোঁট সেজদায়!
কাজল চোখে অধীর অপেক্ষায় থাকে আমার মুখে হাসি টাঙিয়ে রাখার,
একুশ বছর বয়সের জায়গায় সংসারেও আমরা একুশে;
আমাদের কিছুতেই প্রবেশ করেনি পরিবির্তন,
শুধু পালটে গেছে আমাদের চুলের রঙ, আর বয়সের ওজন,
আমাদের পরিচয়ে যোগ হয়েছে একটি পবিত্র নাম;
আফিয়া তাহমি,
যে শৈশবে বাবার নামে লিখতো : তানিয়া তাহসিন,
আর মায়ের নামে লিখে দিতো আমার নাম!