আপনার জমিতে ফসল চাষ করতে গেলে, নিড়ানি দিতে হয় আগাছা পরিষ্কার করার জন্য। ভালো ফসল ঘরে তোলার জন্য নিতে হয় যত্ন বিশেষ শ্রম বা কামলা দিয়ে। তবেই আপনার জমি থেকে ভালো ফলাফল আশা করা যায়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো এখন একজন কৃষক সেই বিষয়টি বুঝলে ও সাহিত্যের জগতে বড় নগণ্য অভাব, সবাই বুঝে না এই নিড়ানি মানেই হলো সমালোচনা। সমালোচনা মানেই হলো সাহিত্যের মান বৃদ্ধি করা।

যে সাহিত্যে সমালোচনা নেই, আমি মনে করি আগেকার দিনের হারিকেনের চিমনি র লাহান। আমরা যখন ছোট ছিলাম। তখন প্রতিদিন বিকেলে প্রধান দায়িত্ব ছিল, কেরোসিনের  জ্বালানো হারিকেনের চিমনি মুছনের কাজটি করা। কারণ, হারিকেন বা কুপি ছিল তখনকার গ্রামাঞ্চলে রাতের প্রধান আলোর উৎস। হারিকেন দীর্ঘসময় জ্বালানোর পর কাঁচের চিমনি তে কালো ধুয়া তে ময়লা হয়ে যেতো; এতে কাপড় বা ধানের তুষ দিয়ে মুছে নিলে পরিষ্কার গ্লাসের মতো চকচকে সুন্দর দেখা তো। এবং বেশি আলো পাওয়া যেতো।

ঠিক তেমনি সাহিত্যে যদি সমালোচনা না থাকে, হাইব্রিড সাহিত্য চর্চা করে কবি লেখক বৃদ্ধি পেলেও, এই সমাজে এসব সাহিত্য পোল্টি মুরগির মতোই অপ কারে গ্রাস করবে, নীরব ভাইরাসের মতো। যদিও হারিকেনের চিমনি র মত কালো ধুয়াটে ময়লা সবাই দেখে না; কেউ কেউ দেখে ও মুখ খুলে, কলম তুলে কিছু লিখছে না, যারা লিখছেন বড় নগণ্য কয়েকজন। আবার কেউ কেউ নিজ কে সামলিয়ে নিচ্ছেন, যদি বা আবার কেউ কিছু বলে ফেলে, চাচা আপন প্রাণ বাঁচার মতো, সাহিত্যের প্রাণ যায় যায়।

আজ যদিও বলা ঠিক না, সত্যের কদর বড় নগণ্য, তবু বলে যায় চাটুকারিতায় সাগরে ডুবে বা বড় পদের চেয়ার আর সম্মানে তেলা মাথায় তেল দানে সাহিত্যের জগত সু-প্রসিদ্ধ। তারা লেজুরভিত্তিক বাহ্-বা কুড়াচ্ছে নোবেল পাওয়ার তৃপ্তির ঢেকুর তলাতে গিয়েছে মলাটের।

এদিকে আবার  সাহিত্য চর্চার গ্রুপে গ্রুপে চলছে কবিত্ব সম্মাননা ও সার্টিফিকেট প্রদান।  যদিও কেউ কেউ এটাকে সফলতা ভাবছেন প্রশংসা র বিলাসিতায়, এই বিষয়টি হাস্যকর হলেও এভাবেই কেউ ভালো কিছু করার চেষ্টা করছেন। লিখলেন কেউ এমন
কাকের ঠ্যাং
বকের ঠ্যাং
আসছে দ্যাখো
কিশোর গ্যাং  
আপনার লেখাটি না পড়ে, কিছু না বোঝে অনেকেই আপনাকে স্রোতে ভাসিয়ে দিচ্ছে দেখুন:  বাহ্ বাহ্, অসাধারণ, সেরা কবিতা, প্রিয় কবি, কমেন্টের তোষামোদ পরিচয়ে আপনার মেধা কে তলানি তে চুবিয়ে মারছেন। যদিও আপনার ছিল ভালো একটি মেধা সৃষ্টিকর্তার সেরা একটি দান। কখন আপনার সেরা মেধা হারিয়ে গেলো প্রাণ, শূন্য হলো মান, বোঝার আগেই অজ্ঞান।

আর এদিকে কিছু নামে বে নামে প্রকাশনা, আবেগে ভাসা তারুণ্যের স্বপ্নকে গুড়েবালি করে দিচ্ছে, তাদের ব্যবসায়িক চটকদার বিজ্ঞাপনে। তবুও শেষ কথা এই এখানেই চালনি র ফাঁকে, কুলো র ঝাড়ে, সকল বাঁধা আপত্তি, বিপত্তি পেরিয়ে কেউ কেউ এখনো টিকে আছেন, থাকবেন তারা জ্বলে উঠবে ই প্রভাতের রবির আলোয়। মেঘ ঢাকা চাঁদ হাসবে ই সৃষ্টিশীল স্রষ্টার সেরা দান মেধার উজ্জ্বল আলো। সব শেষে এই বলি, তারুণ্যের এই মেধা কে আলোচনা-সমালোচনায় আরো নিখুঁত করার জন্য সম্মানিত সচেতন মহল এগিয়ে আসলে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য চর্চার আসবে ব্যাপক উন্নয়ন ও বিশ্বায়নের পরিবর্তন। এই প্রত্যাশায় সমালোচনা গ্রহণ করা ও সমালোচনা বৃদ্ধি হোক।

ইবনে মনির হোসেন
ব্রাহ্মণবাড়িয়া