ফেলানির নিথর দেহ ঝুলে আছে কাঁটাতারের গায়ে
ওই গুলি যে চালাল, সে তো ছিল দাদা বাহিনীর ছায়া
হাজার আঘাতে, মৃত্যুর বেদনায় কুঁকড়ে ওঠে ফেলানি
আমি নির্লিপ্ত চোখে দেখি, প্রতিবাদ করব না কিছুতেই।  

তিস্তা নদী আমার,
ওরা জল ছিনিয়ে নিয়ে  যায়
দুর্ভাগ্যের খেলা শুরু হয় বর্ষায়—  
ভাসিয়ে দেয় বাড়ি, গরু, মানুষ, চাষের মাঠ
অথচ আমি নিরবে চুপ করে, শুধু চোখের জল ফেলে যাই
প্রতিবাদ করব না কিছুতেই।

এ মাটির ওপর পতাকা উড়ে
পতাকা, আমার মহান স্বাধীনতার চিহ্ন-
তবুও হারিয়ে যায় নাগরিক অধিকার,
শহীদের রক্তে ডুবন্ত দেশের পথে প্রান্তরে
কোথায় আমার সেই কাঙ্ক্ষিত মুক্তি?
আমি সবকিছুই দেখি-শুনি-বুঝি-
তবুও, চুপচাপ সহ্য করি, কখনোই কিছু বলি না।  

ক্ষমতা লোভী শত্রুদের বন্দুকের গুলিতে
ঠা ঠা আওয়াজ ভাসে, দীর্ঘ হয় লাশের সারি
শোষকের হাতে লাঠির শব্দ, শাসনের আড়ালে-
বিপ্লবের নাম দিয়ে, আরও কত মানুষ মরে যাবে?  
বিবেকের তাড়নায় দগ্ধ হতে হতে আমি সজাগ হই
তবুও, চুপ করেই থাকি, কিচ্ছুটি বলি না।  

রক্তে রঞ্জিত রাজপথে আসীন তাদের গদি
স্বাধীনতার ইতিহাস ধ্বংস-
শহীদের রক্তে পিচ্ছিল মাটি
তবুও এদের সামনে চুপ হয়ে থাকি;
আমার বলার সময় আসেনি,—শুধু সহ্য করি।  

এরা শাসক, এরা দানব, এরা মুখোশধারী শয়তান
এদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার সাহস আমার নেই
তাইতো আমি চুপ, মৃত্যুতে আমার ভীষণ ভয়
ওহে দয়াময়, আমি যেন চিরকাল বেঁচে রই!
কেননা, এই সমাজে
যেখানে শব্দই শত্রু-
সেখানে চুপ থাকাই কি জীবনের একমাত্র সঠিক পথ নয়?