এই শহরের ভাতের হোটেলের গল্পগুলো যেন একেকটা দুঃস্বপ্ন,  
যেখানে মানুষ খেতে আসে, ভাত,  
আর কেউ কেউ ফেরে না জীবিত।  
হাউন আংকেলের হোটেলে কে ভাত খায়নি?  
সেখানে তো ভাতের সঙ্গে ছিলো নিরবতা,  
আর কিছুটা মৃদু অস্বস্তি,  
তবুও কেউ মারা যায়নি।  
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাতের হোটেল?  
সেখানকার ভাত যেন বিষ,  
আর শাস্তির লাঠি ঝুলে থাকে মাথার ওপর।  

প্রথম দিনেই ভাতের বদলে পিটুনি,  
একজন মানসিক রোগীকে পেটানো হলো,  
কারণ কী! তিনি কি ভাতের দাম দিতে পারেননি?  
না, এখানে ভাতের মূল্য শুধু টাকায় নয়,  
এখানে মূল্য চুকাতে হয় জীবন দিয়ে।  
"টাকা পাঠান!"—তাকে পিটিয়ে ফেলা হলো,  
ফোন দিয়ে বলা হলো,  
কিন্তু টাকা এলো না,  
তাই আবার পেটানো হলো।  

সে মানসিক প্রতিবন্ধী ছিল,  
কিন্তু পেটানোর সময় সেটা আর মনে থাকলো না।  
তাকে মানুষ ভাবা বন্ধ হলো  
যখন গরীব আর অসহায় ট্যাগ তার গায়ে বসলো
তখন তাকে আরও উৎসাহে পেটানো হলো।

এই হোটেলে আজকাল মানুষ শুধু খেতে আসে না,  
এখানে আসে তামাশা দেখতে,  
কেউ ভিডিও করে,  
কেউ তালি দেয়,  
আর কেউ চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে।  
তাদের চেহারায় মায়া নেই,  
তাদের চোখে শুধুই এক বন্য হিংস্রতা,  
যেন আদিম কায়দায় হত্যা আজকের নতুন বিনোদন।  

গল্পের দেশে চরিত্র বদলায়,  
কিন্তু আচরণ বদলায় না।  
এখানে মানুষ মারা যায় ভাতের হোটেলে,  
এখানে জীবন মাপে চালের কেজিতে,  
আর মৃত্যু আসে লাঠির আঘাতে।  
আহা, সেই হাউন আংকেলের হোটেল—  
সেখানে অন্তত ভাতের সঙ্গে ছিলো বেঁচে ফেরার সুযোগ।  

কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাতের হোটেল?  
সেখানে ভাতের বদলে মেলে পিটুনি,  
আর আদিমতা—  
যা আমাদের আধুনিকতার মুখোশের নিচে চিরকাল জেগে থাকে।  
এখানে সবাই ভুল হোটেলের ভাত খায়,  
কারণ তারা জানে না,  
ভাতের সঙ্গে আসছে মৃত্যুর মেনু।  
এ শহরে, এই ভাতের হোটেলে,  
মানুষ মানুষকে খাওয়ানোর নামে  
খাবারের বদলে হত্যা করছে।