এক দেশে এক মুরব্বি, বাহ্যরূপে বড়ই উদারমনা,  
এসেই বললেন, “লিখো যত পারো, তবেই তো বুঝব,  
আমি ঠিক পথে আছি নাকি ভুল পথে হাঁটছি।”  
লেখক মনের আনন্দে কলম চালাল,  
প্রতিটি শব্দ যেন স্বাধীনতার শপথ।  

কিন্তু হায়! মুরব্বির সাগরেদরা অমন কথা শুনে হাঁসফাঁস করে,  
ভাবলো, “এতো সমালোচনা শুনতে হলে আমাদের অবস্থা কী হবে!”  
তারা দৌড়ালো মুরব্বির কাছে, বললো, “দেখেন, এই লেখক তো সব উল্টো-পাল্টা লিখছে।  
এভাবে চললে তো আমাদের আয়-রোজগারেও হাত পড়বে!”  

মুরব্বি মুচকি হেসে বললেন, “আরে বোকা,  
লেখকের কলম তো শুধু কাগজেই চলে না,  
তাতে মানুষের মনও চলে, সময়ও বদলায়।  
সত্যিই যদি সাগরেদ হও, যাও, কলমের চলা ঠেকাও!”  

সাগরেদরা দলে দলে গিয়ে লেখকের কলমের পেছনে লাগলো,  
একজন বললো, “কলমটা ছিনিয়ে নাও!”  
আরেকজন বললো, “কালি ফুরিয়ে দাও!”  
তৃতীয়জন ভাবলো, “পুরো খাতা জ্বালিয়ে দিলেই তো সব সমস্যার সমাধান!”  

কিন্তু লেখক হেসে বললেন, “বুঝলে ভাই,  
এই কলম কোনদিন কোনো খাঁচায় বন্দি হয় নাই,  
তোমরা কালি চাও, কাগজ চাও, নিয়ে যাও, সব ফুরিয়ে যাবে,  
কিন্তু আমার লেখা রয়ে যাবে হাওয়ায় ভাসা ধোঁয়ার মতো।  

এই মাটি একদিন গড়ে উঠবে আমাদের হাতে,  
তোমরা; সাগরেদরা তখন শুধু ছায়া খুঁজবে মুখ লুকোনোর,  
আর মুরব্বি—তিনি তখন ভাববেন, ‘হায়, সমালোচনা শুনলেই তো বুঝতাম, আমি ভুলটা করলাম কোথায়!’”