বিশ্বাস ছিল এক পৃথিবী, যেই পৃথিবীতে
আমরা সবাই একে অপরকে ধরে চলতাম,
কিন্তু আজ সেই পৃথিবী ভাঙা চাকার মতো
যতটুকু ঘোরে, ততটুকুই পিছলে যায়,
আর কোথাও থামে না—
এটা আর অক্ষত থাকে না
এটা এখন জীবনের জঞ্জাল হয়ে গেছে
এটা আর কোনো পথ দেখাতে পারে না।
বিশ্বাস ছিল এক সুন্দর পথ
যে পথে আলোর ঝলক ছিল
আজ সেই পথ বালি হয়ে গেছে
যেখানে পা ফেললেই তলিয়ে যাই
যতই হাঁটতে চায়
ততই পায়ের নিচে ভেঙে যায়;
এটা আর গন্তব্য দেখায় না
এটা এখন অন্ধকারের বিপথ!
বিশ্বাস ছিল এক নদী
যার পানি ছিল শুধু নির্জন শান্তি
আজ সেই নদী তলিয়ে গেছে
এটা আর কোনো গন্তব্যে পৌঁছায় না
এটা এখন ভীষণ উথাল-পাথাল
এটা আর পথিকদের আশ্রয় হতে পারে না
এটা ভরা কাদায় পরিণত হয়ে গেছে।
এখন, কেউ যখন বিশ্বাসের দিকে তাকায়
সে দেখে শুধু বিষাক্ত জল।
বিশ্বাস ছিল এক গাছ
যার শাখায় স্বপ্নের ফল ঝুলত
আজ সেই গাছ তেলতেলে পাতায় মুড়ে গেছে
এটা আর বিশ্বাসের ফল দেয় না
এটা এখন মিথ্যার ফল হয়ে গেছে
যতটুকু নেবো, ততটুকু গলা চড়ে
আর যা কিছু হাতে নেবো—
তাতে শুধু ধোঁকার গন্ধ।
বিশ্বাস ছিল এক গহনা
যার মধ্যে ছিল আত্ম বিশ্বাসের রত্ন
আজ সেই গহনা ভেঙে গেছে
এটা আর স্বর্ণের মতো ঝলমল করে না
এটা এখন ধূলির মতো ম্লান হয়ে গেছে
এটা আর হৃদয়ের সঙ্গী নয়
এটা শুধু ক্ষত হয়ে গেছে
যার মধ্যে আর কোনও রঙ নেই
শুধু ধোঁয়া আর অন্ধকার।
বিশ্বাস ছিল এক পাখি
যে উড়ে যেত স্বপ্নের আকাশে
আজ সেই পাখি পাখনার দুঃখে কাঁদে
এটা আর গাইতে পারে না গান
পাখি এখন বিচ্ছিন্ন, ক্ষতবিক্ষত।
এটা আর উড়ে চলে না
সে এখন ভূপাতিত হয়ে পড়ে।
এখন,
বিশ্বাস অশান্তির আরেক নাম হয়ে গেছে
আর আমরা, যারা বিশ্বাস করেছিলাম
আমরা ধোঁকার মেঘে ঢাকা পড়েছি।
বিশ্বাস ছিল এক শক্তিশালী পিলার
আজ সেই পিলার ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে
যেটা আর দাঁড়িয়ে থাকে না
এটা এখন শূন্যতার মতো হেলে পড়ে।
বিশ্বাসের বাড়ি, এক সময় ছিল,
আজ সেই বাড়িও ধ্বংসস্তুপ—
এটা আর কোনো আশ্রয় দেয় না
এটা শুধুই ছাই হয়ে গেছে।
বিশ্বাসের অভাব পৃথিবীকে শুষে নেয়
এটা কোনোদিন পূর্ণ হবে না
এটা ভাঙা যাত্রার চিহ্ন
আর সেই চিহ্ন, কখনো মুছে যাবে না
এটা রয়ে যাবে, অস্তিত্বের অন্ধকারে।