তোমার মাটি সোঁদা গন্ধে ভরা, আমার বুকের ভেতর ঢেউ তোলে
তোমার নদী—পদ্মা, মেঘনা, যমুনা—
মনে করিয়ে দেয় রক্তের মতো বয়ে যাওয়া দিনগুলো
আমার কানে আজও ভেসে আসে সেই স্লোগান—
“জয় বাংলা!” যেন প্রতিটি দেহের শিরায় শিরায় জ্বলে ওঠা বিদ্রোহের আগুন

কিন্তু আজ, এই মাটিতে দাঁড়িয়ে আমি প্রশ্ন করি
স্বাধীনতার মানচিত্র কি সত্যিই আমাদের?
লাঙলের ফলা কি চাষির হাতে,
নাকি নষ্টের জমিনে বাঁধা রয়েছে ভিখারির রক্তমাখা ঘাম?

মুক্তিযোদ্ধার ছাইভস্ম আজ মিশে আছে শীতের কুয়াশায়
তার সন্তানেরা কেমন আছে, কে জানে?
তাদের গল্পই বা কে শোনে,
যখন সভার আসনে বসে গড়া হয় দুর্নীতির নতুন সংবিধান?

তোমার ভাষা, বাংলা, আমার জিভে লেগে থাকে মধুর মতো
কিন্তু সেই মধুতে কে যেন বিষ মিশিয়ে দিয়েছে!
একুশের অঙ্গীকার কি শুধু একদিনের ফুলেল অনুষ্ঠান?
নাকি কোনো একদিন সত্যিই উদযাপিত হবে এই মাটির স্বাধীনতা?

তোমার মাটিতে দাঁড়িয়ে আমি বিদ্রোহী হতে চাই
আমি হতে চাই সেই কৃষক, যে তার ঘামে ভিজিয়ে ফসল ফলায়
আমি হতে চাই সেই বীর, যে তার বুকের রক্ত দিয়ে তোমাকে রক্ষা করে
তোমার জন্য, হে আমার দেশ,
আমি আবার প্রাণ দিতে রাজি।

তুমি যেন শুধু মাটির মানচিত্র নও,
তুমি আমার বুকের ভেতর ঢুকে থাকা এক শুদ্ধ প্রেম
তোমার পতাকায় বেঁধে রাখি আমার স্বপ্ন,
তোমার বাতাসে মিশিয়ে দিই আমার প্রতিটি নিঃশ্বাস
তুমি বাঁচো অনন্তকাল, হে বাংলাদেশ
আমাদের প্রতিটি সংগ্রামে, প্রতিটি স্বপ্নে...