ইসরাফিলের শিঙ্গা বেজে ওঠে, আকাশ ফেটে যায়,
জগতের প্রতিটি কণিকা থেমে, এক ভয়াবহ ধ্বনি ছায়।
পাহাড় শিহরিত, সাগর উথলে, বাতাস থেমে যায় দমকে,
মানুষের মুখে অজানা আতঙ্ক, সময় যেন কেঁদে ওঠে গোপনে।
এই তো সেই দিন— যার প্রতীক্ষায় কাঁপে প্রতিটি হৃদয়,
জীবন-মৃত্যুর মাঝে আজ সব হিসাবের শেষ পর্ব খোলে ভয়।

প্রথম ফুঁ-এর সুর যেন এক অজানা শঙ্কার ডাক,
মাটির তলে থাকা আত্মাও যেন শুনতে পায় সেই বাঁশির হাক।
চোখের পলকে সবকিছু বদলায়, আলো অন্ধকারে মেশে,
প্রকৃতি স্তব্ধ, মানুষ ছুটে, কোথাও নেই কোনো মুক্তির শেষ।
পৃথিবী জানে, এ সময় আর ফিরে আসবে না,
প্রলয়ের হাত ছুঁয়েছে সকলেই— যতক্ষণ থামবে না!

দ্বিতীয় ফুঁ-এর গভীরতা, শূন্যতা সব গ্রাস করে,
সব প্রাণ, সব কোলাহল নীরব, সময় যেন নিঃশ্বাস ফেলে থামে।
জগতের প্রতিটি প্রাণী মিশে যায় মাটির তলে,
আকাশ ঝুঁকে পড়ে স্তব্ধতায়, সবকিছু তার ভিতরে নেভে।
আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না, কে বেঁচে থাকে—
তাঁর ইচ্ছাতেই জগৎ তখন নিষ্প্রভ ধ্রুবতারায় নক্ষত্রমণ্ডল দেখে।

তৃতীয় ফুঁ-এর সুর যেন পুনর্জন্মের গান,
মৃত আত্মা উঠে দাঁড়ায়, জাগ্রত হয় এক অপরাধবোধে মহান।
বিচারের মুহূর্ত ঘনিয়ে আসে, আল্লাহর সামনে সবকিছু স্পষ্ট,
প্রাণের প্রতিটি কর্মের হিসাব আজ খুলে ধরে সর্বমস্তক।
ফেরেশতারা আসে, শান্তির কথা বলে,
তারা জানে— ন্যায়ের পথে যারা চলে, তাদের মুখে হাসির আলো চলে।

কিন্তু যারা লুকিয়ে ছিল পাপের অন্ধকারে,
তাদের চোখে ভয়ের প্রতিচ্ছবি ফুটে ওঠে নিরবধি।
বিচারের সেই মুহূর্তে, আলো-অন্ধকারের পথে দাঁড়িয়ে,
প্রত্যেক জীবন তার সত্য নিয়ে আসে আল্লাহর সম্মুখ পানে।

এখনো সময় আছে, মানুষ জানে না শেষ মুহূর্তের দিন,
জীবনের প্রতিটি কাজ হয়ে যাবে একদিন হিসাবের ছায়াতল।
ইসরাফিলের ফুঁ বেজে ওঠার আগে,
মানুষ কীভাবে খুঁজে নেবে আল্লাহর সেই সরল পথে?
জীবনের গভীরে যদি আল্লাহর করুণা থাকে,
তবেই সেই দিন হবে সত্যের জয়, ভয় আর শাস্তির রহস্য গোপনে রেখে।