ইলিশ! সে তো আজ শুধুই মাছ নয়,  
সে যেনো রাজ্যের রাণী, মাথায় মুকুট, গায়ে রুপালি আবরণ।  
বহুকাল সে হাঁটে না আর সাধারণ মানুষের পাতের পথে,  
সে বসে গেছে ক্ষমতার সিংহাসনে, জাঁকিয়ে।

আগে তার ঘ্রাণে ভরে উঠতো রাঁধুনি মা'র আঙিনা,  
ঝোলে ভাসতো আদর মাখানো শৈশবের ঘ্রাণ,  
কিন্তু গতকাল থেকে আজ?  
ইলিশের সেই ঘ্রাণ আটকে গেছে ক্ষমতার বড়বাড়ির জানালায়।  
সাধারণ মানুষের জন্য সে এক দূরের নক্ষত্র,  
যাকে দেখা যায়, ছোঁয়া যায় না!

বাজারের রাস্তায় ঘাম ঝরিয়ে দাঁড়িয়ে আছি,  
এক পাশে শোভা পাচ্ছে রাজার মতো বড় বড় ইলিশ,  
পাল্লায় তোলা হয় না গরিবের পয়সা দিয়ে,  
ওটা তো রাজনীতির মুদ্রা,  
ওটা তো ক্ষমতার বাণিজ্য!

রাজনীতির ভোজসভায় ইলিশ ঢালছে সোনার থালায়,  
প্রতি কামড়ে বাজে আরেকটি প্রতিশ্রুতির শব্দ;
ইলিশ খাওয়া মানে আজ শুধুই রসনা বিলাস নয়,  
ইলিশ খাওয়া মানে আজ দেশ শাসন,
হতভাগ্য জনতার বোকা ভাগ্য নিয়ে খেলা করা।

কস্মিনকালেও আমাদের পাতে পড়ে না সেই রূপালি ইলিশ,  
আমরা শুধু চেয়ে চেয়ে দেখি—  
দেখি কীভাবে ঘাটের থেকে সোজা নেতার ফ্রিজে চলে যায় সে,  
তাতে মাখানো হয় ষড়যন্ত্রের ঝোল,  
নির্বাচনের ডাল,  
আর আশার শুঁটকি!

যে ইলিশ ছিলো সবার,
আজ সে হয়ে গেছে ক্ষমতার প্রতীক,  
যেনো অন্য কারোর জন্মগত অধিকার—  
আর গরিব?  
গরিবের গল্পে ইলিশ থাকে কেবল স্বপ্নের সীমানায়,  
পাঙ্গাশে কিংবা কাঁচা মরিচ আর পান্তা ভাতে।

বোকা নাগরিক,
অপলক নয়নে দেখি
চোখের কোণে জল নিয়ে দেখি  
ইলিশ নামের সেই রূপকথা শুনি, হায়...
সময়ের ফেরে ঐ রূপালি মাছ আজ রাজনীতির নায়িকা!
এ কেমন ইঁদুর কপালে আমাদের জীবন?  
যে জীবন রয়ে গেলো কাঁটার মতো,
আটকে আছে একই জালে—  দুর্বিপাকে,
দুর্ভিক্ষের ঝোলে কিংবা ক্ষমতার কারচুপিতে,  
নয়তো পোড়া কপালে অথবা হারানো ইলিশের গল্পে!