চারিদিকে শেয়াল আর কুকুরের ভীড়, বনের মাঝখানে,
গাধা দাঁড়িয়ে বলে, “শোনো একবার, জানো নিজ মানে
শিক্ষিত হও, বোঝো এই ব্যর্থ লড়াই,
বংশগৌরবের মোহে কেন এতো ধ্বংস চাই?”
কুকুর চেঁচিয়ে বলে,
“গাধা, তুই কিসের উপদেশ দিস,
এই বনের ইতিহাস তুই বুঝিসই না কিসসু!
আমার বাপ-দাদারা লড়েছে রক্তের ঝড়ে,
আমিও লড়বো, এই বীর্যগাথা বয়ে ধরে।”
শেয়াল হেসে ওঠে গাধার মায়া দেখে,
বলে, “গাধা, তুই যা তোর মূর্খ জোঁকে!
তুই কি জানিস আমার পূর্ব পুরুষদের রণকথা?
আমাদের বংশ রক্ষার এটাই একমাত্র পথ!”
গাধা অবাক হয়ে শূন্যে তাকায়,
বৃথা কথা বলে, বোঝাতে চায়,
“তোমরা কি বোঝো না, এই হিংসার খেলা,
শুধু তোমাদেরই নয়, বনেরও সর্বনাশের মেলা।”
বনের প্রতিটি গাছে তখন রক্তের দাগ,
মাটির কোলে মিশে যায় সব আহ্লাদ-অনুরাগ!
কিন্তু শেয়াল-কুকুরের রাগ কমে না কিছুতেই,
নিজেদের অজ্ঞতায় বন্দী চিরতর, চলে মিছে বৈঠক।
গাধা চুপ করে দেখে যুদ্ধের দৃশ্য,
মনে তার হাহাকার, আর্তির বিচ্ছুরণ
শেষবার বলে, “নিজেকে জানো, এতো লড়াই কেন?
বংশ রক্ষার নামে কেন এমন করুণ জ্বালাও পোড়াও বনে।”
কিন্তু তার কথা ঢেউয়ের মতো হারিয়ে যায়,
কোনো শেয়াল, কোনো কুকুর শোনে না এ দায়!
যুদ্ধ চলে অবিরাম, গাধা - নীরবে ফিরে যায়,
শূন্য বন পড়ে থাকে রক্তাভ নীলবর্ণে।
বছর পেরিয়ে যায়, সব স্মৃতি হয় পুরাতন,
শেয়াল আর কুকুরের গল্প পড়ি-ধূলো জমানো বইয়ের পাতায়!
গাধার উপদেশ বলে ফিসফিসিয়ে,
“তোমরা বুঝলে না, নিজেরা কী ছিলে, কী ছিল এই বন,
শুধু লড়াই রেখে গেলে, রেখে গেলে এক শূন্য দহন।”