আমার একটা পৃথিবী ছিলো
অগণিত স্বপ্নে ভরা পৃথিবী,
যেখানে ছিল -
অবাধ ছুটে চলার স্বাধীনতা,
যার নির্মল বাতাসে ছিল মুক্তি-
সবুজের বুকে ছিলো স্বস্তি,
তার কোথাও ছিল না রক্তের খোঁজ।

কিন্তু একদিন
ওরা রক্তাক্ত,
জনপদে এসে বললো-
"এই পৃথিবী আর তোমার নয়
এখন থেকে এটা আমাদের
আমরাই এর সীমা বেঁধে দেবো
মাটিতে গেড়ে দেবো  নতুন শিকল,
পৃথিবীর বুকে লেখা হবে - নতুন সীমারেখা।"

ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, তন্ত্র, মন্ত্র;
এইসব দিয়ে গড়া হলো নতুন নতুন দেয়াল
এটা হলো দেশ, ওটা হলো মহাদেশ
এটা হলো জাত! ওটা হলো পাত!!
ভূত্বকের পুরুত্ব থেকে বেরিয়ে এসে -
আকাশ মাটি পানি বায়ু সবকিছুই ভাগাভাগি হয়ে গেল!!!
আর ঐ সবকিছুই ধীরেসুস্থে ঘাড়ে চেপে বসলো
পৃথিবীর চারিদিক ছেঁয়ে গেল নিকষ অন্ধকারে
তাহলে এখন, আমার মুক্তি কোথায়?

হ্যাঁ, এক সময়,  
এই পৃথিবী ছিল একেবারে আমার
আমিই ছিলাম এর একচ্ছত্র অধিপতি,
কিন্তু আজ,  
পাসপোর্ট, ভিসা, অনুমতি—  
অথবা শর্তের বেড়ি,  
যেখানেই যেতে চাই,  
খুঁজতে হয় লাল কালো সীল-অনুমতি পত্র!

ওরা বলেছে,
"এটাই তোমার সীমারেখা-
এর বাইরে বিন্দুমাত্র অধিকার নেই,"  
তারা আরও বলে দিলো,  
"শুধু আমরাই জানি—  
তোমার পৃথিবী আমাদের হাতে বন্দী।"

আমিও -
দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেছি:

"আমি মানুষ, এই পৃথিবী আমার
এর আকাশ মাটি পানি বায়ু সবকিছু
শুধুমাত্র এবং একমাত্র আমারই জন্য,
আমার পৃথিবীতে সীমারেখা চাই না।"