জীবন পেরিয়ে যাচ্ছে এক রঙবেরঙের অগোছালো প্রান্তর,
সময় তার নিয়মে কেটে যাচ্ছে—
প্রতি ক্ষণে গড়ে উঠছে মানব-বৃক্ষের নতুন ডালপালা।
চারপাশে ভিড় জমাচ্ছে বিপ্রতীপ প্রাণেরা,
কেউ জানে না কোথা থেকে এসেছে,
আবার কোথায় হারিয়ে যাবে।

এখন গভীর রাত,
তেপান্তরের বেনামী পোকাদের ডাক
আমার নির্জনতা চুরমার করে দিয়ে
গান হয়ে বাজে অন্ধকারের গহীনে।
ঘুমহীন চোখের এই রাত জাগার
কারণ খুঁজতে গিয়ে,
আমি কেবল শব্দের খেলা দেখি—
অন্ধকার গুনছি নীরবে,
প্রতিটি ধ্বনির মাঝে
একাকীত্বের সুর মেলাই।

তবুও ঘুম আসে না কিছুতেই।
সম্ভবত আমার বেখেয়ালি ঘুম
আটকে গেছে প্রেয়সীর খিল আঁটা শয়নকক্ষে,
যেখানে আলো আর অন্ধকারের মিলন
কেবল তার চোখের কোলজুড়ে সাজানো।
আমি জানি না,
সেখানে কি কোনো মিষ্টি স্বপ্নের লুকোচুরি,
নাকি পুরনো দিনের গান বেজে ওঠে নিঃশব্দে।

এই রাত, এই অন্ধকার,
আমাকে আরও গভীরে টেনে নেয়।
আমি শব্দের সাথে শব্দ জুড়ি—
একটি কবিতা তৈরি করি
যা হয়তো কখনো পৌঁছাবে না
তার ঘুমন্ত হৃদয়ের দরজায়।
তবুও এই চেষ্টা,
এই নির্ঘুম রাতের উপহার,
তাকে বলবে,
“তুমি আমার সমস্ত প্রহরের কেন্দ্রবিন্দু।”

তেপান্তরের ডাক এখনও থামেনি,
পোকাদের করুণ সুরে মিশে গেছে
আমার নির্জন হৃদয়ের আর্তনাদ।
আমি ভেবেছিলাম,
অন্ধকারের মাঝে ঘুম এসে জড়িয়ে ধরবে,
কিন্তু সে এখনো অনুপস্থিত।
তুমি কি জানো?
আমার ঘুম তোমার চোখের পাতায়
একটি দোলনা হয়ে দোলে।

আমি তাকাই রাতের আকাশের দিকে—
তুমি কি জানো, তারা তারার ভিড়ে
তোমার মুখের ছায়া দেখি প্রতিদিন?
আমার বেখেয়ালি ঘুম,
তোমার হৃদয়ের আলিঙ্গনে বাঁধা পড়ে আছে।

এখনও আমি শুয়ে আছি,
বসছি, নীরবতা গুনছি।
এই রাত কেবল দীর্ঘ হয়,
তেপান্তরের ডাক,
আমার মনের প্রতিধ্বনি হয়ে বাজে।
আমি জানি,
একদিন আমার ঘুম ফিরে আসবে—
তোমার হাতে লেখা এক টুকরো চিঠির মতো,
যেখানে শুধুই থাকবে,
“আমি তোমার, চিরকালের জন্য।”