তোমাকে ব্যাখ্যা করবো কি!
আমার শব্দরা ব্যর্থ,
তোমার প্রতিটি রেখায় লুকায়িত এক অপার্থিব অর্থ।
বর্ণমালার অজানা পথে হেঁটে চলি নিঃশব্দে,
তোমার চিবুকে যেন গ্রন্থিত এক আকাশের ছন্দে।
তোমার চোখ?
তা তো দুইটি মহাসাগরের ঢেউ,
যেখানে ডুবলে আমি ভুলে যাই সকল ব্যথার সে ঠেউ।
তোমার ঠোঁট? যেন ভোরের প্রথম আলো,
যা আমার আঁধারে মেশায় সোনার রং, চমৎকার ভালো।
তোমার ভুরু,
সূক্ষ্মতিল, চুলের বুনন,
এসবই তো শিল্প, যা বর্ণনারও অতীত গুণন।
আমি কি পারি সেই তিলের মানে খুঁজে পেতে?
সেখানে লুকানো মায়ার রূপ, যা বোঝা দুষ্কর মনে।
তোমার আঙুলের,
প্রতিটি ভাঁজে যেন লুকানো কাব্য,
যা স্পর্শ করে হৃদয়ের গভীরে, দেয় সুরেলা প্রত্যক্ষ।
তোমার ত্বকের কোমলতায় মিশে থাকা সুবাস,
যা আমার শব্দহীন ভ্রমণে এনে দেয় উন্মুখ আভাস।
তোমার হাসি?
এক অজানা ভাষার গাথা,
যেখানে হৃদয়ের ছন্দ মিলে যায় শত সহস্র প্রথা।
তোমার স্পর্শ? যেন দোলাচলের শিহরণ,
যা জাগিয়ে তোলে মলিন জীবনের প্রতিটি শিরায় মন।
তোমার অনুভূতি,
তোমার আবেগের গভীরতা,
সে সব তো আকাশ, যা ছোঁয়া যায় না হাত বাড়িয়ে।
তোমার হৃদয়ের আড়ালে যে রহস্যের দেয়াল,
তা আমার সকল বোধের বাইরের এক নীলকাল।
তোমাকে বর্ণনা
করবো কেমন করে বলো,
যেখানে আমার বর্ণনার শূন্যতাই আমার মূল ছলো।
তোমাকে স্পর্শ করবো শব্দ দিয়ে, সে আমার সাধ্য নয়,
তুমি তো সেই সীমাহীন সৃষ্টির, যা শুধুই অনন্তময়।
তোমার সামনে দাঁড়িয়ে আমি এক মূর্তিমতি নীরবতা,
তোমার ছায়ার কাছে আমি শুধু ম্রিয়মান গভীরতা।
তোমার আলো আর আঁধারের মাঝে হারিয়ে যায় মন,
তোমাকে ব্যাখ্যা করা, প্রিয়তমা, অসম্ভব এক পন।
তুমি আমার কাছে
এক মহাজাগতিক ছায়াপথ,
যার প্রতিটি তারায় লেখা প্রেমের অমর গ্রন্থ।
তোমাকে বর্ণনা করতে গেলে হারাই আমি নিজেই,
তোমার রূপ-গাথায় আমি হয়ে যাই নিরন্তর ধ্রুবতারা সই।