আমি একটি রক্ত করবী ফুলের খোঁজে ছিলাম
তারা আমাকে বলেছিল লাশ কাটা ঘরের দিকে যেতে
ওখানে একটি মেয়ে ঘুমিয়ে ছিল, ভয়ঙ্কর এক আতঙ্কে বিকৃত তার মুখ
তার বাম স্তনের বোঁটাটা খুঁজে পাওয়া যায় নি
রক্ত শুকিয়ে সে স্তনটিকে এক ঢাকনার আবরণ দিয়েছিল
কলা পাতায় অন্য স্তনটি ছিল ঢাকা,
একটা ছেড়া কাপড় কেউ দিয়ে রেখেছিল নাভির নীচটায়
ডোমের চোখ জোড়া টকটকে লাল দেখতে হলেও
তার এতে কিছু যায় আসে না,
চোলাইয়ের রস গলা দিয়ে নামলেই সবই তার কাছে লাশ,
জীবদ্দশায় এরা কেউ তাকে মানুষ বলে গণ্য করেনি,
অচ্ছুৎ তারা বংশ পরম্পরায়।

আমি তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম মেয়েটি কেন এভাবে ঘুমিয়ে আছে, নগ্ন, ক্ষত বিক্ষত
কেন এমন নীল বর্ণ তার,
কেন আতঙ্কিত বিকৃত তার মুখ,
এক জোড়া লাল চোখ অগ্নি বর্ষণ করেছিল
বলেছিল এর শরীরের দাঁতের দাগ গুলো দেখো
তোমার দাঁতের সাথে মিল খুঁজে পাবে।
আমি তাকে বলেছিলাম আমি একটি রক্ত করবীর খোঁজে এসেছি,
আবারো টকটকে লাল একজোড়া চোখ, বলেছিল
মেয়েটির বাম স্তনটি দেখ
তার বাম স্তনের বোঁটাটা খুঁজে পাওয়া যায় নি,
বলেছিল
ডোম জীবনের বড় প্রাপ্তি হল তাকে কেউ মানুষ বলে ঘৃণা করে না।
সেই ডোমের কাছে আমি একটা রক্ত করবীর পরিচয় জেনেছিলাম
সে তখন ঘুমচ্ছিল লাশ কাটা ঘরের নিস্তব্ধ নীরবতায়!!


পুনশ্চঃ একদা চুরি করে লাশ কাটা ঘরের পাশের বিল্ডিং এর ছাদে দারিয় লাশ কাটা ঘরের খোলা ছাদ দিয়ে জীবনে প্রথম এবং শেষবার লাশ কাটা দেখেছিলাম। লাশ কাটত যে ডোম তারা পাশের বস্তিতেই থাকত। কেউ তাদের সাথে খুব একটা মিশত না বিধায় তাদের জীবন আচার নিয়ে বেশ রহস্য পূর্ণ গল্প প্রচলিত ছিল। এর অনেক পরে দলিতদের সম্পর্কে জেনেছি। এই লেখা আজ সেই দলিত জনগষ্ঠির স্মরণে।