দরবার বসছে
রাজা উজীর মন্ত্রী উপস্থিত, উপস্থিত স্থানীয়
প্রতিনিধি, উপস্থিত আসামী ও আসামী পক্ষের লোক আরও কিছু উৎসুক জনতা।
অপরাধ নাবালক শিশুকে যৌন সম্ভোগ করেছে এক বিধবা নারী ।
জনতা: সত্যি সত্যি যদি ঘটনা ঘটে তাহলে তোমার মতে কি শাস্তি হওয়া উচিত
-গ্রাম ছাড়া করা হোক
-সম্পত্বি লিখে দিক
-জেল হোক
-মৃত্যুদন্ড হলে মন্দ হয় না
-বেকসুর খালাশ দিয়ে দিক
-একশত বেত্রাঘাত করায়হোক
-ঐ ছেলের সাথে বিয়ে দিক
এভাবে নিজস্ব রায় চলতে থাকে
নারীর কোন বয়ান নেয়া হবে না, তার পক্ষ থেকে একজনকে ঠিক করা হয়েছে যে আসামির হয়ে প্রশ্নের উত্তর দিবে।
ঘটনার সময় নিয়ে আলোচনায় বের হলো ঘটনা ঘটেছে ভর দুপুরের সময়,
নদীতে গোসল করতে গিয়ে ছেলেটাকে নাকি নিয়ে যায় ঘরে।
ছেলে পক্ষ অবশ্য অনুপস্থিত, তারা আদৌ এই অভিযোগ করছে কিনা, কেউ নিশ্চিত না।
উজির যে খবর জোগাড় করে তাতে পাওয়া যায় ধর্ষিত ছেলেটি ইচ্ছে করেই ঐ নারীর বাড়িতে গেছিল দুপুর ছিলো না, সময়টা ছিল সন্ধ্যা এবং সে নাকি প্রায়ই ঐ বাড়িতে যাওয়া আসা করে।
এই খবর উজির যদিও দরবারে উপস্থাপন করে না, সে বলে
অভিযোগ সত্য, তবে চিৎকার চেঁচামেচির আওয়াজ পাওয়া যায় নাই, বলে সাক্ষীর খোঁজ মেলে নি।
এইভাবে মাস দেড়েক চলতে রইল বিচার শালিশ, রাজা উজির মন্ত্রীরা আসামিকে ডেকে পাঠায়, তাদের ব্যক্তিগত জিজ্ঞাসা মেটাতে ।
এরপর একদিন দরবারে রাজা ঘোষনা দিলেন
এই নারীর অপরাধ ও তার অবস্থা বিবেচনা করে তাকে মাথা মুন্ডন করে লোকালয়ে ঘুড়ানোর আদেশ দেয়া হল আর হুকুম দেয়া হল প্রতি মৌসুমে রাজদরবারে সশরীরে এসে ফসলের একটা অংশ দিয়ে যাবে।
বিচার বিনোদন শেষ হয়, জনগনের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া, অসহায় নারীকে বোধহয় এর থেকে কম শাস্তি দেয়া যেত না।
এরপরেও ঐ বাড়ীতে সে ছেলের আসা যাওয়া চলতে থাকে। তবে লোকমুখে শুনতে পাওয়া যায় ছেলেটা আসলে পুরুষ নয়।
১৮ মে ২০২৪