মাঝে মাঝে মনে হতো আগে,
এখ্ন রোজ অন্তত পাচ ওয়াক্তে মনে হয়,
আমি যেন আমার আব্বা হয়ে যাচ্ছি।
আমি যখন ছোট ছিলাম
আমি দেখতাম আমার সুশ্রী মায়ের পাশে
আমার কালো খাটো বাবাকে মানায় না,
আমি ভাবতাম এই লোকটাকে
আম্মা কেন বিয়ে করলো ?
লোকটার গায়ের রং ভালো না
আচরনে বেশিরভাগ রগচটা,
সারাদিন কি যেন ভাব্তে থাকে।
এরপর লম্বা বিরতি ,
এই লম্বা বিরতিতে আমার অপ্রিয় মানুষ টা নেই,
মাঝে আমি বয়স ৪-৫ থেকে ২০-২১ হয়ে গেছি
বা তার এক্টু বেশি।
মাঝে মাঝে লোকটা আমাকে দেখতে চাইতো,
আমি চাইতাম না,
আমি ছিলাম বলা যায় এক ময়ুরের দেশে ,
একদম ময়ুরের বেশে ,
কিন্তু আমি কাক মইয়ুর সেজে থাকতাম।
একদিন আম্মার অনেক অনুরোধে
আমি অপ্রিয় সত্যের কাছাকাছি গেলাম,
লোকটাকে আমি চিনতে পারলাম না,
কোকড়া চুল নেই, মাঝে টাক নেই।
সুবিশাল শরীর নেই,
যেন অনেকদিন খেতে পায়নি।
আমি বুঝ্ছিলাম না কি করবো
কি হচ্ছে আমার ভেতর
লোকটা শরীরের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে
আমাকে জড়িয়ে ধরলো ,
আর যেন ছাড়লো না।
আমার এতো বছরের সব কিছু ভেঙে গেলো
বারে বার ভাংতেই থাকলো,
আমি যেন শেষ হয়ে গেলাম !
আমি যেন বুঝতে পারলাম সকল সরল অংকের
গরল সমাধান,
আমার কাচের দুনিয়া মুহূর্তে ভেঙে চৌচির হয়ে গেলো!
সেইইই আমার শেষ দেখা...
লোকটা যেন আমাকে দেখার জন্য ছোয়ার জন্য
একা একা কাটিয়ে দিলো দুই যুগ !
আজ আর আব্বা নেই।
কিন্তু আমি আছি ,সীমাহীন পাপ-অপরাধ
আর কষ্ট নিয়ে,
আমি যেন আমার আব্বা হয়ে যাচ্ছি ,
আমি কালো হয়ে গেছি, চুল একই রকম ,
একই রগচটা , একই রকম গায়ের ঘ্রান...
আব্বা আমি তোমাকে খুব অনুভব করি '
এই কথাটা যদি বলা যেতো
আব্বা জানতে পারতো
বাঁ আব্বা জানে, আব্বা জানতো
আমাদের জেনেটিক্যাল ফিলোসফি
এইরকমই হয়তো।
বিদ্রঃ এ কবিতা আমার ব্যাক্তিগত দায়মুক্তির কবিতা শুধু যেন নিজের অনুভূতি থেকে মুক্ত হবার বৃথা চেষ্টা