কত যে করেছি মোরা হেলা
নিমগ্ন হয়ে যায় গো তবে বেলা
নিশীথ হলে আমি একাকী
গোধূলির বনে রবি দিয়াছে ফাকি
চন্দ্র সেথায় দিয়াছে দেখা
চরণে মোর এলো জোছনার রেখা
নভশ্চর সব উঠিল জেগে
বায়ু বহিল ঢের গতির বেগে
নীল গগনের শোভাসব গেল যে ঢেকে
প্রত্যূষের তরে সঞ্চিত জোছনা সব রেখে,

পবনের ছোঁয়া মোরে করিছে প্রাণময়
   মুদে করিবার চায় আখি
   সেথায় উড়িছে সব পাখি
ঘুমের স্বপন মোর সহিত কথা কয়,
রাত্রির জোনাকিতে লীলাসব নীরালা
প্রেমের তরে তোমায় আজি কে পরালে মালা!
শশীর আলো জ্বলিছে সারা গগন জুড়ে
মগন মোরা ঘুমের তলে মোদেরই অন্তঃপুরে,
এই নিস্তব্ধতা কোথাও নাহি পাই
কেহ কোথাও আজি নাই
শুধু বায়ুর কুসুম ধারা
সুরের পুলকে গান গাহে সব নক্ষত্র তারা-

হেথায় হোথায় বায়ুসব করিছে যাপন
পুলকিত করিয়া মন কহে মোরা সবাই আপন,
  মৃদ্যু ঘন ঝিল্লার ধ্বনি
  চারিপাশের আকাশে-
  মোরা কান পেতে শুনি
   নদধারার সকাশে,
শুধুই বাতাসের আল্পনা ছড়ায়ে-
আছে সুদূর নীল আকাশে
ছোঁয়া সাগরের বাতাসে
পুষ্পিত করিয়া দেয় মোরে ভরায়ে,

ছেঁড়া ছেঁড়া ফুলের পাপড়ি-
গুলো তোমার অসীমে তোমায় আজ ধরি,
মোর অতীতের সব বেদনাগুচ্ছ
জানি, এ শুধুই এক অলীক তুচ্ছ
তাহা তুমি নাথ, সুরের আনন্দে দাও তুমি-
উড়িয়ে মেকী সব মিথ্যার ভালে
মোর তনুভরে গ্লানি   চূর্ণ করিয়া সুখসব টানি
গগন জ্বলে একসময় সুরের তালে তালে,
ঘন কুয়াশায় হারায়র ফেলি নিজেরে
     বাসনার আচ্ছাদনে
সুখের স্ময়সব নাহি আর ফেরে
     মোর জোছনার দর্পণে।
১৬ই কার্তিক,
  ১৪২৭।