।।১।।
মানুষ এক থাকে না,
না থাকে মানুষের হৃদয়
পুরানো দিনগুলি শুধু এক স্বপ্ন
হৃদয়ের শিলালিপিও ক্রমে হয় ক্ষয়-
প্রেমও মিলিয়ে যায় শূন্যে,
চক্ষু অশ্রুও ধূলায় একাকার-
গাছের প্রাণও হারিয়ে যায় কোনো অজ্ঞাত সিন্ধুর তীরে
জগতের মায়াও হয়ে যায় অসাড়,
কোনো প্রিয় সত্ত্বাকেও সখী
অজ্ঞাতসারে ভুলে যায়-
গাছের শরীরভেজা শিশির শুকিয়ে যায়
অতীতের মিছে শীতলতায়
এই শূন্যতায় তবু আলোক ছায়,
চলমান শাশ্বত নব বিশ্বের চরিতার্থতায়।

     ।।২।।
কে তুমি সখী! হৃদয়খানি যাও তুমি ভরে
নব রসের মাধুর্য্যে ফুলমালা পরে ঝরে ঝরে-
       হৃদয়ের তলে      নূতন পরশের দোলে
               কোনো দেবীর রূপে-
           এসেছো তুমি হিয়ার কূপে,
    নির্মল বায়ুর ঘরে
কে তুমি সখী! প্রেমের বার্তা নাও ধরে।
শত নবীন পুষ্পরাশি     বক্ষের তলে বাজায় বাঁশি
   মুখখানি শারদপ্রাতে নিঝুম মধুরাতে ওঠে জ্বলিয়া-
                স্বপন হাওয়ার ছলে,
চক্ষু যায় না সরে    মায়ার কূপে হরষে ঝরে পড়ে
        প্রেমের ধ্বনিতে আলুলিত তোমার কেশ,
        হাসির বরষে চিন্তা হয় সব শেষ-
    রাখিয়াছি ফুলের সৌরভ তোমার তরে
কে তুমি সখী! প্রেমের প্রাসাদ দিয়াছো তুমি গড়ে।

      ।।৩।।
কোনো এক নিরব পাখি
গান গায় প্রাণ ভরে
বৃষ্টি আসিয়া রবি গিয়াছে ঢাকি
  আকাশের রঙ মেঘলা করে-
গহন আঁধারে দীপ নিভে নিভে জ্বলে,
   একেলা অন্ধকারের ঘরে
মেঘ গর্জন করিয়া ওঠে নিখিলনভ ভাসিয়া,
মনেরও মুক্তির আঁশ নিরব কুটীরে আসিয়া-
        তেমনি বিরলে যায় সে সরে।
এত বিভেদ চূর্ণ করিয়া
নিজের ধ্রুব সত্য বুকে ধরিয়া-
যাও তুমি মুক্তির খোঁজে যাও,
বহুদূর যেথা শান্তি রহিয়াছে তাও
        ফিরিয়া নাও তোমার আপনেরও তরে।
আকাশ হতে নব পুষ্প
  বৃষ্টিরূপে পড়ে
জলের শীতলতায় বক হয় ধন্য-
  জীবনের উল্লাসখানি ভরে,
গাছও খেলা করে মেঘেরও হরষে-
প্রেমও জাগিয়া ওঠে বৃষ্টির বরষে
পবনসব কেঁপে ওঠে সিক্ত রুপিণীর পরশে,
   ঐখানটায় কনকমালা পড়ে ঝরে ঝরে।।
আজ ১৭ কার্তিক,
    ১৪২৭।