দিন আর দৈন্যতার টানাপোড়েনে, আঁচলে জমে থাকা স্মৃতির খাজানা, ধূসর আজি শত বর্ষের ঊর্দ্ধে।
প্রথম প্রহরে পরিশোধিত রঙিন ঘুড়ি, সুতো কেটে পালিয়েছে ঐ দিগন্তের ওপারে। মাটির সোঁদা গন্ধ পাওয়া এই নাসিকা,আজ ভুলেছে প্রশ্বাস নিতে।
ঘাসফড়িংয়ের পিছু পিছু ছুটে চলা, পাদুকা বিসর্জন দেওয়া দুরন্ত পা দুটো আজ, জায়গা করে নিয়েছে চোরাবালিতে। শরৎকালে সাদা মেঘের ভেলায়, পদ্মা নদীর মাঝি কুবের, কি কপিলাকে নিয়ে কভু ভেসেছিল! মনে পড়েনা।
সখিনা আর অপেক্ষায় থাকেনা সেই রিক্সাওয়ালার জন্য, যে ভাগ্যের খোঁজ করতে এসেছিল ঢাকা শহরে। সে গেছে চিরতরে হারিয়ে ঐ লাল নীল রঙের বাত্তির ভিড়ে। কেন সে হারিয়ে গেল! তালগাছওয়ালা গাঁয়ের বিলের জলে এক পায়ে দাড়িয়ে থাকা সেই কানা বগিটির ও খোঁজ নেই বহুকাল।
পাখিরা আর হল্লা করে ভাঙায় না ঐ এক পুকুরের নীরবতা। গোলাপী, এখন আর উঠেনা ট্রেনে। নেই কাজলা দিদির মতো শোলক বলা কেউ আশে-পাশে।
বাপুরাম সাপুড়ে বাজায় না বীণ আর কভুও ভুলে। মাস্টার মশাই ও আর নাম দস্তখত শেখান না।
ধান মেপে দেবার মতো বৃষ্টিও আর ঝেঁপে আসেনা। যায়না যে ময়না বিলের ধারে ঘাস কাটতে আর। বৈশাখ মাসের হাঁটু জলে, গরু গাড়ি হয়না যে পার। আমাদের ছোট গাঁয়ে সব হয়েছে পর,তাইতো খোকা রাগ করে গেছে চলে ফিরেনা আর ঘর।
আতা গাছে তোতা পাখির নাই দেখা বহুকাল। হাতি ঘোড়া নাচেনা, তাইতো সোনামনি রাগ করে ফুলিয়ে রাখে তার গাল।
চারদিকে কেবল নীরবতা আর নীরবতা, কেমন যেন গা ছমছম করা শুনশান নীরবতা। এই নীরবতা ভেদ করে কেবল একটি জিনিসের ই শব্দ শুনতে পাওয়া যায়।যে শব্দ ছিল অনেক দূর, আজ মনে হয়, এই বুঝি এসে নাড়ল কড়া বাড়ির দরজায়। থেকে থেকে বুকের স্পন্দন যায় বেড়ে। ঐ এলো রে ঐ বুঝি এলো ছুটির ঘন্টা তেড়ে।